ফের ফিরে এল ব্লু হোয়েল চ্যালেঞ্জ গেমের আতঙ্ক, মর্মান্তিক মৃত্যু ভারতীয় ছাত্রের

সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অধ্যায়নরত 20 বছর বয়সী এক ভারতীয় ছাত্রের রহস্যজনক মৃত্যুকে ঘিরে নেটিজেনদের মধ্যে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। কেননা যুবকটির মৃত্যুর সাথে ‘ব্লু হোয়েল গেম’ (Blue Whale Game) চ্যালেঞ্জের যোগসূত্র থাকার দাবি করা হচ্ছে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই এই ঘাতক গেমের ফিরে আসার সম্ভাবনায় অনেকেই ভীতি প্রকাশ করছে। কারণ 8 বছর আগে ভাইরাল হওয়া এই চ্যালেঞ্জের কবলে পরে বেঘোরে প্রাণ হারিয়েছিল একাধিক শিশু/যুবক। এক্ষেত্রে গেমের শেষ পর্যায়ে পৌঁছনোর পর অংশগ্রহণকারীদের ঠিক যেভাবে মৃত্যু হয়, তার সাথে সাম্প্রতিক ঘটনার একাধিক মিল খুঁজে পাওয়া গেছে। যেকারণে এই বিপজ্জনক তথা কুখ্যাত চ্যালেঞ্জের প্রত্যাবর্তন ঘটা নিয়ে বরংবার প্রশ্ন উঠছে।

ব্লু হোয়েল চ্যালেঞ্জ কী? (What is Blue Whale challenge?)

ব্লু হোয়েল চ্যালেঞ্জ ‘সুইসাইডাল গেম’ নামেও পরিচিত, যা 2016 সাল থেকে বিশেষভাবে ভাইরাল হতে শুরু করে। এই গেমের উৎপত্তি রাশিয়ায়। এটি 50 দিন ধরে চলমান থাকে। প্রত্যেকদিন গেমের নেপথ্যে থাকা অ্যাডমিনিস্টেটর বা পরিচালকরা খেলোয়াড়দের একটি করে টাস্ক প্রদান করে। প্রাথমিক পর্যায়ে কয়েকটি সাধারণ ডেয়ার দেওয়া হয় এবং যত দিন যেতে থাকে ততই বিপজ্জনক হতে থাকে এই গেম। কেননা একটা সময়ে এসে, নিজের ক্ষতি হবে এমন টাস্ক অংশগ্রহণকারীদের দেওয়া হয়। সর্বোপরি চূড়ান্ত অর্থাৎ 50তম দিনে পৌঁছে চ্যালেঞ্জ পুরো করার জন্য খেলোয়াড়দের এমন একটি টাস্ক সম্পন্ন করতে বলা হয়, যার দরুন তাদের প্রাণনাশ ঘটে। এক কথায় বললে, ব্লু হোয়েল চ্যালেঞ্জ খেলোয়াড়দের আত্মহত্যা করার জন্য প্ররোচিত করে।

যেকারণে এই আত্মঘাতী গেম দ্বারা যাতে যুবসমাজ প্রভাবিত না হয় তার জন্য ভারত সরকার 2017 সালে কয়েকটি কড়া পদক্ষেপ নেয়। একই সাথে নাগরিকদের এধরণের বিপদসংকুল গেমের থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দিয়ে আপৎকালীন নির্দেশিকাও জারি করা হয়েছিল।

ইতিমধ্যেই এই মর্মান্তিক ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক ইউনিভার্সিটি অফ ম্যাসাচুসেটস -এর অধীনে প্রথম বর্ষে অধ্যয়নরত ভারতীয় ছাত্রকে গত 8ই মার্চ মৃত অবস্থায় খুঁজে পাওয়া যায়। এক্ষেত্রে ব্রিস্টল কাউন্টি ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি অফিসের কর্তৃপক্ষ সাময়িক তদন্তের পরিপ্রেক্ষিতে ঘটনাটি আত্মহত্যা বলে জানিয়েছিল। যদিও মৃত্যুর ধরণ দেখে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন। আসলে আত্মঘাতী ছাত্রটির এক পরিচিত দাবি করেছেন যে, তাকে একটি চ্যালেঞ্জ দেওয়া হয়েছিল। যেখানে তাকে স্বাভাবিক চেয়ে বেশি সময় ধরে শ্বাস আটকে রাখতে বলা হয়। এই চ্যালেঞ্জ সম্পূর্ণ করার সময় তার মৃত্যু ঘটে। এক্ষেত্রে বিষয়টি অনেকের কাছে আত্মহত্যা মনে হলেও, আদপে কিন্তু আত্মহত্যা বলা চলে না। কারণ দ্বিতীয় পক্ষের প্ররোচনার ফাঁদে পরে নিজেকে হত্যা করতে উদ্যত হয়েছিলেন যুবকটি।

জানিয়ে রাখি, ব্লু হোয়েল গেমের অংশ হিসাবে এই ধরনের চ্যালেঞ্জ দেওয়া হতো। যেকারণে ভারতীয় ছাত্রটির সাথে ঘটে যাওয়া মর্মান্তিক ঘটনার সাথে উক্ত গেমের সংযোগ খুঁজে পাচ্ছেন অনেকেই।

সাময়িক তদন্তের পর ঘটনাটি আত্মহত্যা বলে ধরে নেওয়া হলেও, ছাত্রের মৃত্যুর প্রকৃতিকে ঘিরে বারবার নানাবিধ প্রশ্ন ওঠার দরুন এখন বিভিন্ন দিক খতিয়ে দেখছে ব্রিস্টল কাউন্টি ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি অফিসের কর্তৃপক্ষ। মেডিকেল পরীক্ষার রিপোর্ট সামনে এলেই মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যাবে।