Facebook কর্মীরা জনসমক্ষে পরতে পারবেনা কোম্পানির ব্র্যান্ডেড পোষাক

নির্বাচনের রায় বেরিয়ে যাওয়ার পরেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অস্থিরতা বেড়েই চলেছে। ইতিমধ্যেই পূর্বতন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অনুগামীরা ওয়াশিংটন ডিসি’তে অবস্থিত আমেরিকার ক্যাপিটল বিল্ডিংয়ে ব্যাপক তান্ডব চালিয়েছে। এরই প্রতিক্রিয়া হিসেবে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রামের মতো জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্মগুলি ট্রাম্পকে নিষিদ্ধ করেছে। নতুন প্রেসিডেন্ট যতদিন না সম্পূর্ণরূপে দায়িত্ব গ্রহণ করছেন, ততক্ষণ পর্যন্ত এই নিষেধাজ্ঞা বজায় থাকতে পারে। ফলে ফেসবুক কর্তৃপক্ষকেও বারবার ট্রাম্প সমর্থকদের রোষের মুখে পড়তে হচ্ছে। অবস্থা এতটাই শোচনীয় যে নির্দোষ সাধারণ কর্মচারীদের যাতে ট্রাম্প অনুগামীদের হাতে নিগৃহীত হতে না হয় সেজন্য Facebook তাদের কর্মীদের গোপন করার পরামর্শ পর্যন্ত দিচ্ছে! আজ্ঞে হ্যাঁ, অশান্ত পরিবেশের সাথে মানিয়ে চলতে এই নীতিই এখন জুকারবার্গের সংস্থার হাতিয়ার।

আসলে সাম্প্রতিক ঘটনাবলির দিকে লক্ষ্য রেখে Facebook কর্তৃপক্ষ নিজেদের অগণিত কর্মীর বিপদটা আঁচ করতে পারছে। তাই অভ্যন্তরীণ নির্দেশে তারা কর্মীদের ফেসবুক-ব্র্যান্ডেড পোষাক পরে জনসমক্ষে আসতে নিষেধ করছে। তাছাড়া প্রকাশ্যে ফেসবুকের নাম বা লোগো সম্বলিত প্রোডাক্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকার পরামর্শও দেওয়া হচ্ছে। যদিও এর দ্বারা সংস্থার কর্মীদের সুরক্ষা ঠিক কতটা বাড়বে, তা অবশ্য এখনই বলা যাচ্ছেনা।

রাজনৈতিক পালাবদলকে কেন্দ্র করে আমজনতার ক্ষেপে ওঠার ঘটনা অবশ্য নতুন নয়! তবে একুশ শতকের দ্বিতীয় দশকে পৌঁছে আমেরিকার বর্তমান পরিস্থিতি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে নজিরবিহীন সংকটের জন্ম দিয়েছে। কিভাবে এই সংকট থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যায়, যুক্তরাষ্ট্রের তামাম শান্তিপ্রিয় মানুষ সম্ভবত সেই ভাবনাতেই দিন কাটাচ্ছেন। অশান্তি যাতে না বাড়ে সেজন্য ডিজিটাল ও সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলিকেও অধিকতর সংযত ও নমনীয় থাকতে হচ্ছে। আবার গণতন্ত্রের প্রধানতম শর্তগুলিকে মান্যতা দিতে গিয়ে ফেসবুকের মতো জনপ্রিয় সামাজিক মাধ্যম ভূতপূর্ব প্রেসিডেন্টের ওপরে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে বাধ্য হয়েছেন। এই নিষেধাজ্ঞা আগামী দুই সপ্তাহব্যাপী কার্যকর থাকতে পারে বলে জানা গিয়েছে।

আগামী ২০শে জানুয়ারি জো বিডেন, আমেরিকার নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে কার্যভার গ্রহণ করতে চলেছেন। ফলে এখনই ফেসবুক ট্রাম্পের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে রাজি নয়। সংস্থার সিইও মার্ক জুকারবার্গ এই বিষয়ে নিজেদের অভিমত স্পষ্ট করে দিয়েছেন। তবে এর ফলে ট্রাম্প সমর্থকদের সমস্ত রোষ গিয়ে পড়তে পারে ফেসবুকের সাধারণ কর্মীদের উপর। এজন্যই ফেসবুক নিজেদের অভ্যন্তরীণ বলয়ে কর্মীদের ফেসবুক-ব্র্যান্ডেড জামাকাপড় না পরার পরামর্শ দিচ্ছেন। শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের পূর্বে নিজেদের ব্যক্তিগত নিরাপত্তাকে সুনিশ্চিত করতে এই অতিরিক্ত সতর্কতা প্রয়োজনীয় বলে সংস্থার দাবী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *