মোবাইল আর সোশ্যাল মিডিয়ায় ডুবে আছেন? এই ভুলগুলো বিপদ ডেকে আনবে

বর্তমান সময়ে স্মার্টফোন, সোশ্যাল মিডিয়া এবং ইন্টারনেট আমাদের জীবনের সাথে খুবই অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িয়ে পড়েছে। আমরা সকলেই দৈনন্দিক ভিত্তিতে প্রয়োজনে বা অপ্রয়োজনে ইন্টারনেট ব্যবহারে ‘এডিক্টেড’ হয়ে পড়েছি। তবে ডিজিটাল জগতের প্রতি এই ভয়ানক আসক্তি খুবই বিপজ্জনক প্রমাণিত হতে পারে। কেননা, সোশ্যাল মিডিয়ার চাকচিক্যের নেপথ্যে আছে একটি নেতিবাচক দিক। আর একবার যদি এই অন্ধকারের হাতছানিতে কেউ সাড়া দিয়ে দেন, তাহলে সারা জীবন তাকে আফসোস করতে হতে পারে। এমনকি মাত্র ৫ সেকেন্ডে কারো অ্যাকাউন্ট ফাঁকা হয়ে যেতে পারে।

প্রসঙ্গত আপনাদের অবগতের জন্য জানিয়ে রাখি যে, ২০২২ সালের চতুর্থ কোয়ার্টার অবধি ভারতে মোট ৮৪ কোটি ইন্টারনেট ব্যবহারকারী রয়েছে, যা মোট জনসংখ্যার ৬০%। একটি সার্ভে অনুসারে, ইন্টারনেট পরিষেবার সাথে সংযুক্ত প্রত্যেকটি ব্যক্তি দৈনিক প্রায় ২.৫ ঘন্টা সময় ব্যয় করে সোশ্যাল মিডিয়া বা অন্যান্য প্ল্যাটফর্মে। যার পরিপ্রেক্ষিতে এই কথা বলা ভুল হবে না যে – বর্তমান সময়ে মানুষের মধ্যে স্মার্টফোন নির্ভরতা, সোশ্যাল মিডিয়া নির্ভরতা এবং ইন্টারনেট আসক্তি ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। আর আমাদের মধ্যে যত ইন্টারনেট নির্ভরতা বাড়ছে, ততই হুড়মুড়িয়ে বাড়ছে সাইবার অ্যাটাকের সংখ্যা। ২০২০ সালের পর থেকে অর্থাৎ করোনার সময় থেকে মানুষ অধীক সময় মোবাইলের স্ক্রিনে চোখ রাখার পাশাপাশি ব্যাপক ভাবে অনলাইন ট্রানজ্যাকশন করার প্রতি উৎসাহিত হয়েছে। যে কারণে হালফিলে পূর্বের তুলনায় অনেক বেশি সাইবার ক্রাইমের ঘটনা বাড়ছে।

স্কয়ারওয়্যার ব্যবহার করে প্রতারণা :

স্কয়ারওয়্যারের (Scareware) মাধ্যমে হ্যাকাররা, ডিভাইস সিস্টেম ম্যালওয়্যার দ্বারা আক্রান্ত হয়েছে বলে মিথ্যা বা ফলস অ্যালার্ম এবং সতর্কতা পাঠায় ভিক্টিমদের। আর এই নোটিফিকেশন দেখে ডিভাইস ব্যবহারকারীরা ভয় পেয়ে যায় এবং কোনো ভাবনাচিন্তা না করেই এমন সফ্টওয়্যার ইনস্টল করে ফেলেন মোবাইলে যা প্রকৃতপক্ষে ম্যালওয়্যারযুক্ত। স্কয়ারওয়্যারের হল মূলত এমন একটি ম্যালিশিয়াস বা ক্ষতিকারক কম্পিউটার প্রোগ্রাম, যা ব্যবহারকারীদের অপ্রয়োজনীয় প্রোগ্রাম কিনতে বা ডাউনলোড করতে উৎসাহিত করতে ব্যবহৃত হয়। একই সাথে, এই ম্যালওয়ারের সাহায্যে ডিভাইসকে ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত করে তাতে থাকা যাবতীয় সংবেদনশীল তথ্য হস্তগত করে নেয় হ্যাকাররা।

কোন কোন উপায়ে জালিয়াতি করতে পারে প্রতারক :

জালিয়াতি করার জন্য হ্যাকাররা ভিক্টিমদের বিভিন্ন প্রকারের অজুহাত দেয়। যেমন – আপনারা লটারিতে অনেক টাকা জিতেছেন বা লাকি ড্রতে নাম উঠেছে অথবা ইলেক্ট্রিক বিল জমা হয়নি ইত্যাদি লোভ বা ভয় দেখিয়ে ব্যক্তিগত তথ্য হস্তগত করার চেষ্টায় থাকে এই সকল অসৎ ব্যক্তিরা। আর আপনি যদি তাদের কথার জালে ফেঁসে, নিজের যাবতীয় ব্যাঙ্কের তথ্য, যথা – পাসওয়ার্ড, ওটিপি বা কেওয়াইসি বিবরণ দিয়ে দেন, তবে বড়সড় আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হবেন।

প্রতারকদের থেকে সাবধান থাকার উপায় :

বর্তমানে আমরা যেহেতু প্রযুক্তির উপর অনেকটাই নির্ভরশীল হয়ে পড়ছি, সেহেতু আমাদের আরও ভাল অনলাইন সিকিউরিটি সিস্টেম গড়ে তুলতে হবে নিজেদের ডিভাইসে। এর জন্য বিবিধ প্রকারের অ্যান্টি-ভাইরাস অ্যাপ আছে। এছাড়া অনলাইন জালিয়াতির ঘটনা থেকে দুরুত্ব বজায় রাখার আরেকটি সর্বোত্তম উপায় হল ইন্টারনেট ব্যবহার করার সময় অধিক সচেতন থাকা। তবেই অযাচিত সমস্যা ও প্রতারণার ঘটনা এড়ানো যাবে সহজেই।