Tata Altroz iCNG নাকি Maruti Baleno S-CNG? কোন গাড়ি কিনলে আপনার লাভ

দেশীয় গাড়ি নির্মাতা টাটা মোটরস(Tata Motors) তার সিএনজি চালিত ফোর হুইলারের সংখ্যা বৃদ্ধি করতে সম্প্রতি নিয়ে এসেছে Altroz CNG। আনুষ্ঠানিক লঞ্চ কয়েক সপ্তাহ পরে হলেও ইতিমধ্যেই আগ্রহী ক্রেতাগণ এই প্রিমিয়াম হ্যাচব্যাক মডেলটির প্রিবুকিং সেরে ফেলতে পারেন। এক্ষেত্রে ২১,০০০ টাকা টোকেন হিসেবে জমা রাখতে হবে। অন্যদিকে এই একই সেগমেন্টে বাজার কাঁপিয়ে বেড়াচ্ছে মারুতি সুজুকির (Maruti Suzuki) তৈরি Baleno S-CNG। অর্থাৎ সিএনজি এর বাজার গরম করতে এই দুই প্রতিপক্ষের টক্কর জমে উঠবে এবার। সেই জন্যই আমাদের পাঠকদের কাছে গাড়ি দুটির তুল্যমূল্য আলোচনা তুলে ধরা হলো এই প্রতিবেদনে।

চোখ ধাঁধানো ডিজাইন নিয়ে অবতীর্ণ হয়েছে Tata Altroz iCNG

ডিজাইন এবং লুকস এর প্রসঙ্গে বলতে গেলে টাটা অ্যালট্রোজ আই সিএনজি মডেলটির মধ্যে বিশেষ ধরনের ডিজাইন করা হুড, প্রজেক্টর হেডল্যাম্প, বাম্পারের উপর লাগানো ফগল্যাম্প, এলইডি ডিআরএল, কালো রঙের গ্রিল এবং পিছনের দিকের টেলল্যাম্প এই সমস্ত কিছুই যথেষ্ট আকর্ষণীয়। অপর হাতে থাকা ব্যালেনো এস সিএনজি মডেলটিতে ডিজাইন করা বনেট, ক্রমের কাজ করা গ্রিল, চওড়া এয়ার ড্যাম, এলইডি ডিআরএল সহ এলইডি হেডল্যাম্প, রিয়ারভিউ মিররের উপর লাগানো ইন্ডিকেটার, বিশেষভাবে ডিজাইন করা চাকা এবং এলইডি টেল লাইট দেখতে পাওয়া যায়। উভয় ক্ষেত্রেই ১৬ ইঞ্চির অ্যালয় হুইল দেওয়া হয়েছে।

ডাইমেনসনের বিচারে খানিকটা বড় টাটা অ্যালট্রোজ

টাটা মোটরসের এই হ্যাচব্যাক মডেলটির সিএনজি সংস্করণটি লম্বায় চওড়ায় এবং উচ্চতায় যথাক্রমে ৩৯৯০মিমি, ১৭৫৫ মিমি এবং ১৫২৩ মিমি। হুইল বেসের দৈর্ঘ্য ২৫০১ মিমি। মারুতি সুজুকি ব্যালেনো লম্বায় ৩৯৯০মিমি হলেও চওড়ায় এবং উচ্চতায় খানিকটা ছোট- ১৭৪৫ মিমি ও ১৫০০ মিমি। তবে এর হুইল বেশ খানিকটা লম্বা- ২৫২০ মিমি।

ফিচার

টাটা অ্যালট্রোজ আইসিএনজি মডেলটিতে ডুয়েল টোন ড্যাশবোর্ড, ফেব্রিকের তৈরি কেবিনের অন্দরমহল, চাবি ছাড়া ইঞ্জিন স্টার্ট করার ব্যবস্থা, অটোমেটিক ক্লাইমেট কন্ট্রোল, সেমি ডিজিটাল ইন্সট্রুমেন্ট ক্লাস্টার সহ ৭ ইঞ্চির টাচ স্ক্রিন যুক্ত ইনফোটেনমেন্ট প্যানেল দেখতে পাওয়া যায়। আধুনিক বৈশিষ্ট্যের দিক থেকে সমানে টক্কর নিয়েছে ব্যালেনো এস সিএনজি। এটিতেও ব্ল্যাক ও ব্লু রংয়ের ডুয়েল টোন ড্যাশবোর্ড, লেদারেটের কেবিন সজ্জা, হেড আপ ডিসপ্লে, চাবি ছাড়া এন্ট্রি, সেমি ডিজিটাল ইন্সট্রুমেন্ট ক্লাস্টার এবং ৯ ইঞ্চির টাচ স্ক্রিন যুক্ত ইমফোটেনমেন্ট সিস্টেম দেওয়া হয়েছে।

মারুতি সুজুকি ব্যালেনো এস সিএনজি এর ইঞ্জিন অধিক শক্তিশালী

ইঞ্জিনের কর্মক্ষমতার দিকে নজর দিলে দেখা যাবে টাটা অ্যালট্রোজ এর ক্ষেত্রে চালিকাশক্তি যোগায় ১.২ লিটারের পেট্রোল ও সিএনজি দ্বারা পরিচালিত ইঞ্জিন। সিএনজি অপশনে এই ইঞ্জিন থেকে উৎপাদিত পাওয়ার এবং টর্ক আউটপুট যথাক্রমে ৭৬ এইচপি এবং ৯৭ এনএম। অপর প্রান্তে থাকা ব্যালেনো ১.২ লিটারের ইনলাইন ফোর K সিরিজের ইঞ্জিন ব্যবহার করা হয়েছে। সিএনজি দ্বারা চালিত অবস্থায় ইঞ্জিনটি থেকে সর্বোচ্চ ৭৬.৪ এইচপি শক্তি এবং ৯৮.৫ এনএম টর্ক জেনেরেট হয়। ট্রান্সমিশনের দায়িত্ব সামলাতে উভয় ক্ষেত্রেই ৫ ধাপযুক্ত ম্যানুয়াল গিয়ার বক্স নজরে আসে।

কোনটি কিনবেন?

ভারতের মাটিতে মারুতি সুজুকি ব্যালেনো এস সিএনজি এর এক্স শোরুম মূল্য ৮.৩৫ লাখ টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ৯.২৮ লাখ টাকা পর্যন্ত গিয়েছে। অনন্যদিকে, নতুন টাটা অ্যালট্রোজ সিএনজির দাম ৭.৩০ লাখ টাকা (এক্স শোরুম) হবে বলে অনুমান। দুটি গাড়ি তার নিজের স্থানে যথার্থ পারফরমেন্সের দাবিদার হলেও মারুতি সুজুকি ব্যালেনো এসসিএনজি এর ব্যবহৃত ইঞ্জিন অনেক বেশি ভরসা জোগাতে পারে। তাছাড়াও টাটা মোটরস দেশীয় সংস্থা হলেও এদেশে শোরুম এবং সার্ভিস সেন্টারেহ সংখ্যায় কিন্তু মারুতি সুজুকি অনেকটাই এগিয়ে। অর্থাৎ সার্ভিস নেটওয়ার্ক বেশ পোক্ত।