ফের Airtel, Vi কে পিছনে ফেললো Jio, ডাউনলোড স্পিডে শীর্ষে মুকেশ আম্বানিরা

বিগত কয়েক মাসের মতো সেপ্টেম্বরেও গ্রাহকদের উন্নত পরিষেবা সরবরাহের ধারা অক্ষুণ্ণ রাখলো Reliance Jio ও Vodafone Idea বা Vi। গত মাসে এই দুই টেলিকম কোম্পানি সেরা ইন্টারনেট স্পিড প্রদানে অন্য সব সংস্থাকে পিছনে ফেলে দিয়েছে। যদিও এই প্রথম নয়, দীর্ঘদিন ধরেই Reliance Jio এবং Vi ইউজারদের যথাক্রমে সেরা ডাউনলোড ও আপলোড স্পিড প্রদান করে আসছে; এবং সেপ্টেম্বর মাসেও এর কোনো অন্যথা হয়নি। টেলিকম রেগুলেটরি অথরিটি অফ ইন্ডিয়া বা ট্রাই (TRAI)-এর নিজস্ব মাইস্পিড (MySpeed) পোর্টাল থেকে প্রাপ্ত ডেটা অনুযায়ী জানা গিয়েছে যে, গত বেশ কয়েক মাসের মতো সেপ্টেম্বরেও গ্রাহকদের সর্বোচ্চ ডাউনলোড স্পিড প্রদান করেছে Jio। অন্যদিকে Vi-ও বিগত কয়েক মাসের মতোই ইউজারদেরকে সর্বাধিক আপলোড স্পিড অফার করার রেকর্ড কায়েম রেখেছে। চলুন, গত মাসে কোন টেলিকম কোম্পানি ইউজারদেরকে কত আপলোড এবং ডাউনলোড স্পিড প্রদান করেছে, সে সম্পর্কে একটু বিশদে জেনে নেওয়া যাক।

২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে Airtel, Jio, Vi, এবং BSNL কর্তৃক প্রদত্ত ডাউনলোড স্পিড

ট্রাই-এর তরফে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, সর্বোচ্চ ১৯.১ এমবিপিএস ডাউনলোড স্পিড অফার করে শীর্ষস্থানটি নিজেদের দখলে রেখেছে জিও। এরপরে বহুদিন বাদে এই তালিকার দ্বিতীয় স্থানটি অধিকার করতে সক্ষম হয়েছে এয়ারটেল, তারা গত মাসে ইউজারদেরকে ১৪ এমবিপিএস ডাউনলোড স্পিড প্রদান করেছে। এরপর যথাক্রমে ১২.৭ এমবিপিএস এবং ৫ এমবিপিএস ডাউনলোড স্পিড প্রদান করে তৃতীয় এবং চতুর্থ স্থানটি নিজেদের দখলে রেখেছে ভোডাফোন আইডিয়া এবং বিএসএনএল (ভারত সঞ্চার নিগম লিমিটেড)। উল্লেখ্য যে, উপরিউক্ত তথ্যগুলি হল টেলিকম কোম্পানিগুলি কর্তৃক প্রদত্ত গড় ডাউনলোড স্পিড ডেটা। এই প্রসঙ্গে বলে রাখি, রিয়েল-টাইমে মাইস্পিড অ্যাপ্লিকেশন (MySpeed Application)-এর সাহায্যে সারা ভারত জুড়ে সংগৃহীত তথ্যের উপর ভিত্তি করে প্রতি মাসেই টেলিকম সংস্থাগুলির গড় নেট স্পিড কাউন্ট করে ট্রাই।

২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে Jio, Vi, Airtel, এবং BSNL কর্তৃক প্রদত্ত আপলোড স্পিড

আপলোড স্পিড ডিপার্টমেন্টে, সবচেয়ে কম ৪.২ এমবিপিএস আপলোড স্পিড প্রদান করেছে বিএসএনএল। অন্যদিকে, এয়ারটেল, জিও এবং ভিআই সেপ্টেম্বর মাসে ইউজারদেরকে যথাক্রমে ৪.৬ এমবিপিএস, ৬.৯ এমবিপিএস এবং ৭.৩ এমবিপিএস আপলোড স্পিড অফার করেছে। আগেই বলেছি যে, ভোডাফোন আইডিয়া দীর্ঘদিন ধরেই আপলোড স্পিড ডিপার্টমেন্টের শীর্ষস্থানটি নিজেদের দখলে রেখেছে। সেক্ষেত্রে বহুদিন ধরেই সংস্থার বেহাল দশার কথা প্রকাশ্যে আসলেও এটি যে নিঃসন্দেহে ভিআই-এর পক্ষে একটি ইতিবাচক দিক, তা বলাই বাহুল্য।

ইউজারদেরকে সত্যিকারের 4G সার্ভিস দিতে গেলে টেলিকম কোম্পানিগুলিকে আরও কঠোর পরিশ্রম করতে হবে

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, বছরছয়েক আগেই দেশে 4G সার্ভিস চালু হয়ে গেলেও এখনও পর্যন্ত কিন্তু সমস্ত সংস্থার পরিষেবা নিয়েই ইউজারদের বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। তাই বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন যে, গ্রাহকদেরকে সত্যিকারের 4G সার্ভিস প্রদান করতে হলে তিনটি বেসরকারি টেলিকম অপারেটরকে এখনও অনেক কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। অন্যদিকে, BSNL এখনও সারা দেশে 4G পরিষেবা চালু করতে পারেনি। যদিও সরকারি মালিকানাধীন টেলিকম কোম্পানিটির চেয়ারম্যান এবং ম্যানেজিং ডিরেক্টর পি কে পুরওয়ার (P K Purwar) হালফিলে বেশ জোর দিয়ে বলেছেন যে, চলতি বছরের নভেম্বর থেকে BSNL ব্যবহারকারীদের জন্য 4G সার্ভিস উপলব্ধ হবে, এবং আগামী বছরের ১৫ আগস্ট ভারতে সংস্থাটি তাদের নিজস্ব 5G সার্ভিস চালু করবে; তবে এই পরিকল্পনা আদৌ বাস্তবায়িত হবে কি না, তা একমাত্র সময়ই বলতে পারবে। তবে সার্বিকভাবে উন্নত মানের নেট পরিষেবা প্রদানের লক্ষ্যে দেশের প্রতিটি টেলিকম কোম্পানিকে যে আরও জোরকদমে কাজ করতে হবে, সে বিষয়ে নিশ্চিত প্রযুক্তিবিদরা। আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত স্পিড টেস্টার ওকলা (Ookla)-র মতে, ২০২২ সালের আগস্টে গ্রাহকদের কাছে সেরা ডাউনলোড স্পিড পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে গোটা বিশ্বে ভারত ১১৭ তম স্থান দখল করেছে। সেক্ষেত্রে প্রথম স্থানে পৌঁছোতে গেলে যে আরও অনেক কঠোর পরিশ্রমের প্রয়োজন, সেকথা নিঃসন্দেহে বলাই বাহুল্য।