২০২৪ সালের মধ্যে আসতে পারে প্রথম দেশীয় কমার্শিয়াল প্রসেসর! কেন্দ্রের বড় ঘোষণা

Avatar

Published on:

একথা আমরা সবাই জানি যে, আত্মনির্ভর ভারত গঠনের লক্ষ্য নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বছরখানেক আগে ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ উদ্যোগের সূচনা করেছিলেন। ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র শিল্পও যাতে দেশীয় প্রযুক্তিনির্ভর হয়, তার জন্য দেশের ছোটো, বড়ো ও মাঝারি মাপের শিল্পপতিদের কাছে আর্জি জানিয়েছিলেন তিনি। আর তারপর থেকেই এই প্রকল্পকে সাফল্যমণ্ডিত করার লক্ষ্যে স্বদেশী প্রযুক্তির ওপর ভিত্তি করে একের পর এক জিনিস তৈরি করা হচ্ছে। আর সম্প্রতি পাওয়া খবর অনুযায়ী, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রাজীব চন্দ্রশেখর বুধবার জানিয়েছেন যে, ডিজিটাল ইন্ডিয়া ‘RISC-V’ কর্মসূচির আওতায় ২০২৩-২৪ সালের মধ্যে প্রথম দেশীয় প্রসেসর বাণিজ্যিকভাবে চালু করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে ভারত সরকার। হ্যাঁ ঠিকই পড়েছেন!

ইলেক্ট্রনিক্স ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী বলেছেন যে, ডিজিটাল ইন্ডিয়া ‘RISC-V (DIR-V)’ কর্মসূচির লক্ষ্য হল পরবর্তী প্রজন্মের মাইক্রোপ্রসেসর তৈরি করা যা গতিশীলতা, কম্পিউটিং এবং ডিজিটাইজেশনের উপর ভারতের কৌশলগত ফোকাসের প্রয়োজনীয়তা পূরণ করবে। নিঃসন্দেহে এটি একটি অত্যন্ত বড়ো পদক্ষেপ। তিনি আরও জানিয়েছেন যে, শক্তি (SHAKTI) এবং ভেগা (VEGA) প্রসেসরের বাণিজ্যিক সিলিকনের প্রথম সেটটি ২০২৩-এর ডিসেম্বর বা ২০২৪-এর প্রথম দিকে উপলব্ধ হবে।

উল্লেখ্য যে, আইআইটি মাদ্রাজ এবং সেন্টার ফর ডেভেলপমেন্ট অফ অ্যাডভান্সড কম্পিউটিং (CDAC), ইলেকট্রনিক্স ও আইটি মন্ত্রকের মাইক্রোপ্রসেসর ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রামের অধীনে ওপেন সোর্স আর্কিটেকচার ব্যবহার করে শক্তি (৩২ বিট) এবং ভেগা (৬৪ বিট) নামে দুটি মাইক্রোপ্রসেসর তৈরি করেছে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী চন্দ্রশেখর সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, সরকার চায় যে কমপক্ষে কিছু কোম্পানি ২০২৩-২৪ সালের আগে তাদের প্রোডাক্ট ডিজাইনের জন্য শক্তি এবং ভেগা গ্রহণ করুক; এবং যখন সিলিকন প্রস্তুত হয়ে যাবে, তখন তারা যেন তাদের প্রোডাক্টগুলিতে এটিকে ব্যবহার করা শুরু করে দেয়।

এক্ষেত্রে বলে রাখি, সরকার আইআইটি মাদ্রাজের পরিচালক অধ্যাপক ভি. কামাকোটি (V. Kamakoti)-কে প্রধান আর্কিটেক্ট এবং CDAC ত্রিবান্দ্রমের বিজ্ঞানী কৃষ্ণকুমার রাও (Krishnakumar Rao)-কে ‘DIR-V’ প্রোগ্রামের প্রোগ্রাম ম্যানেজার হিসেবে নিয়োগ করেছে। দেশীয় প্রযুক্তিতে নির্মিত প্রসেসরকে যথাযথভাবে ডেভেলপ করার জন্য ‘DIR-V’ প্রোগ্রামটি বেশ কয়েকটি বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান, স্টার্টআপ এবং স্থানীয় দলের সঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করবে। প্রসেসরটি কীভাবে তৈরি হবে, এর কর্মক্ষমতা কত হবে এবং এর জন্য মূলত কী কী সরঞ্জাম লাগবে – সে বিষয়ে শীর্ষস্থানীয় গবেষক ও নির্মাতাদের মতামত নেওয়া হবে। আর এর সুবাদে ভারত যে সার্বিকভাবে লাভবান হবে, সেকথা বলাই বাহুল্য। উল্লেখ্য যে, দেশে একটি সেমিকন্ডাক্টর ইকোসিস্টেম তৈরির জন্য সরকারের ৭৬,০০০ কোটি টাকার প্রচেষ্টার একটি অংশ হল এই ‘DIR-V’ উদ্যোগ। ফলে মেক ইন ইন্ডিয়া জয়যাত্রার দিকে দেশ যে আরও একধাপ এগিয়ে যেতে চলেছে, সেকথা খুব স্পষ্টভাবে বোঝা যাচ্ছে।

সঙ্গে থাকুন ➥