কলকাতাসহ এই শহরগুলিতে 5G চালু করছে Jio এবং Airtel, কেমন হবে খরচ?

5G (৫জি)-কে কেন্দ্র করে সকল ভারতবাসীর দীর্ঘদিনের অপেক্ষার অবসান খুব শীঘ্রই হতে চলেছে বলে মনে করা যেতে পারে। কেননা কিছুদিন আগেই নয়াদিল্লির লালকেল্লায় ৭৫তম স্বাধীনতা দিবস উদযাপনের সময় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জানিয়েছেন যে, 5G-র জন্য অপেক্ষার দিন শেষ, খুব শীঘ্রই এদেশে আসতে চলেছে পরবর্তী প্রজন্মের ‘রকেটের’ গতির নেটওয়ার্ক। তাছাড়া টেলিকম সংস্থাগুলিও শীঘ্রই পরবর্তী প্রজন্মের নেটওয়ার্ক চালু করার ইঙ্গিত দিয়েছে। ফলে এই মুহূর্তে 5G-কে ঘিরে আপামর জনসাধারণের উন্মাদনা রীতিমতো চরমে পৌঁছেছে। তবে সেইসাথে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নও আমজনতার মাথায় ঘোরাফেরা করছে, যেগুলি হল –

১. ভারতে কবে টেলিকম সংস্থাগুলি তাদের ৫জি পরিষেবা চালু করবে?

২. সর্বপ্রথম কোন সংস্থা আপামর দেশবাসীর জন্য পঞ্চম প্রজন্মের নেটওয়ার্ক সার্ভিস নিয়ে হাজির হবে?

৩. ৫জি নেটওয়ার্ক ব্যবহার করতে চাইলে কত টাকা খরচ করতে হবে?

৪. সর্বপ্রথম কোন কোন শহরে এই দুরন্ত গতির নেটওয়ার্ক পরিষেবা চালু হবে?

সেক্ষেত্রে আপনাদের মনেও যদি এই প্রশ্নগুলি উঁকিঝুঁকি মারে, তাহলে আমাদের আজকের এই প্রতিবেদনটি একবার পুরোটা পড়ে নিন। কারণ আজ আমরা এই বিষয়গুলির সম্পর্কেই বিস্তারিত তথ্য আপনাদেরকে জানাতে চলেছি।

কারা সর্বপ্রথম চালু করবে 5G পরিষেবা এবং কবে?

আপনাদের জানিয়ে রাখি, দেশের প্রধান টেলিকম অপারেটরগুলি আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই ৫জি রোলআউটের জন্য এই মুহূর্তে জোরকদমে কাজ চালাচ্ছে। সম্ভবত অক্টোবর মাসের মধ্যে এই নেটওয়ার্ক ব্যবহারের জন্য উপলব্ধ হবে। তবে কারা সর্বপ্রথম এদেশে ৫জি সার্ভিস নিয়ে আসবে, সেটাই বর্তমানে টেক মহলের মুখ্য আলোচ্য বিষয়। ৫জি রোলআউটের দৌড়ে অন্যতম প্রধান দুই প্রতিযোগী হল জিও (Jio) এবং এয়ারটেল (Airtel)। এই দুটি সংস্থার মধ্যে শুরু থেকেই ৫জি সার্ভিস আনাকে কেন্দ্র করে হালফিলে জোর টক্কর চলছে। জিও এবং এয়ারটেল উভয়ই খুব শীঘ্রই ৫জি পরিষেবা চালু করার কথা ঘোষণা করেছে। 

এর মধ্যে এয়ারটেলের সিইও গোপাল ভিত্তল (Gopal Vittal) কিছুদিন নিশ্চিত করেছেন যে, সংস্থাটি আগস্টে ৫জি পরিষেবা চালু করবে। এই কারণে স্যামসাং (Samsung), নোকিয়া (Nokia) এবং এরিকসন (Ericsson)-এর মতো কোম্পানির সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধেছে এয়ারটেল। জানা গিয়েছে যে, ২০২৪ সালের মধ্যে দেশের প্রতিটি প্রান্তে কোম্পানিটি ৫জি পরিষেবা পৌঁছে দিতে চায়। অন্যদিকে, জিও-ও খুব শীঘ্রই ৫জি চালু করার ইঙ্গিত দিয়েছে। তবে টেক দুনিয়ায় ঘোরাফেরা করা বেশ কয়েকটি রিপোর্ট থেকে জানা গিয়েছে যে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আগামী ২৯ সেপ্টেম্বর ইন্ডিয়া মোবাইল কংগ্রেস (IMC)-এর উদ্বোধনের সময় ৫জি চালু করবেন।

সর্বপ্রথম কোন কোন শহরে 5G পরিষেবা চালু হবে?

জানা গিয়েছে যে, এয়ারটেল প্রাথমিকভাবে ১৩টি শহরে ৫জি চালু করবে। এই তালিকায় রয়েছে কলকাতা, আহমেদাবাদ, বেঙ্গালুরু, চণ্ডীগড়, চেন্নাই, দিল্লি, গান্ধীনগর, গুরুগ্রাম, হায়দ্রাবাদ, জামনগর, লখনউ, মুম্বই ও পুণে। অন্যদিকে, জিও দেশের ১০০০টি শহরে ৫জি চালু করার পরিকল্পনা করছে বলে খবর পাওয়া গিয়েছে।

5G ব্যবহার করার জন্য কত টাকা খরচ করতে হবে?

এখনও পর্যন্ত কোনো টেলিকম সংস্থাই ৫জি প্ল্যানের দাম বা ব্যবহারিক খরচ ঘোষণা করেনি। তবে সূত্রের দাবি, শুরুর দিকে ৪জি (4G) প্ল্যানগুলির দামকে কেন্দ্র করে টেলিকম সংস্থাগুলির মধ্যে যেরকম দ্বন্দ্বযুদ্ধ লক্ষ্য করা গিয়েছিল (বিশেষত জিও এবং এয়ারটেলের মধ্যে), ৫জি-র ক্ষেত্রে আর তেমনটা হবে না। যদিও উভয়ের নেটওয়ার্কের প্ল্যানের মধ্যে একটি বিশেষ পার্থক্য থাকবে, এমনটা নিশ্চিতভাবে বলা যায়। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, বেশ কিছুদিন আগে ভোডাফোন আইডিয়া (Vodafone Idea) স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছিল যে, ৫জি প্ল্যানের জন্য গ্রাহকদের ৪জি-র তুলনায় বেশ অনেকটাই বেশি টাকা খরচ করতে হবে, কারণ প্ল্যানগুলি প্রিমিয়াম মূল্যে বাজারে আসবে।

অন্যদিকে, দেশের শীর্ষস্থানীয় টেলিকম কোম্পানি Jio-র তরফে আসন্ন 5G প্ল্যানের দাম প্রসঙ্গে বিশেষ কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে Airtel-এর সিটিও রণদীপ সেখন (Randeep Sekhon) 5G স্পেকট্রামের নিলামের আগেই বলেছিলেন যে, গ্লোবাল মার্কেটে 5G এবং 4G প্ল্যানের মধ্যে বিশেষ কোনো ফারাক নেই; তাই ভারতেও এরকমই ছবি থাকবে বলে আশা করা যায়। এখন বাস্তবটা ঠিক কী দাঁড়াবে, তা একমাত্র সময়ই বলতে পারবে!