নতুন স্মার্টফোন কিনবেন? পুজোর সময় ফের বাড়তে চলেছে দাম

পুজোর মরশুমে যারা নতুন স্মার্টফোন কেনার কথা ভাবছেন, তাদের জন্য দুঃসংবাদ। কারণ চলতি সময়ে স্মার্টফোনের দাম পূর্বের নিরিখে অনেকটাই বাড়তে চলেছে। ফলে সামনেই কোনো সেল থেকে অপেক্ষাকৃত কম দামে পছন্দের ডিভাইস কিনতে হলে অতিরিক্ত টাকা পকেট থেকে বেরিয়ে যেতে বাধ্য। তাছাড়া পুজো উপলক্ষ্যে এবার স্মার্টফোনের নতুন মডেল লঞ্চের হার বেশ কম। অর্থাৎ সব দিক দিয়েই সময়টা স্মার্টফোনপ্রেমীদের জন্য অনুপযুক্ত। যদিও আলোচ্য পরিস্থিতি তৈরী হওয়ার পিছনে নির্দিষ্ট কারণ রয়েছে। এক্ষেত্রে স্মার্টফোন প্রস্তুতিতে ব্যবহৃত বিভিন্ন উপাদানের সরবরাহ ঘাটতি একটা বড় ভূমিকা পালন করছে বলে জানা গিয়েছে।

চাহিদা আছে, যোগান নেই – নিরুপায় বাজার

স্মার্টফোন প্রস্তুতিতে সেমিকন্ডাক্টর একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। সাধারণ অবস্থায় বাজারে এর অভাব দেখা যায় না। তবে কোভিডের ফলে বাড়িতে থেকে কাজ ও অনলাইন শিক্ষাগ্রহণের প্রবণতা বাড়তে থাকায় চিত্র খানিকটা বদলেছে। কেননা এই ধরনের কাজে ব্যবহারের জন্য প্রয়োজনীয় বৈদ্যুতিক পণ্য তৈরীতে সেমিকন্ডাক্টর খুবই গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। ফলে বর্তমানে খুব স্বাভাবিকভাবেই সেমিকন্ডাকটরের চাহিদা ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে। অথচ চাহিদা অনুযায়ী যোগানে ঘাটতি থাকায় এর দাম ক্রমশ উর্ধ্বমুখী।

মূলত সেমিকন্ডাক্টর চিপসেটের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণেই পুজোর মরশুমে নতুন স্মার্টফোনের দাম ৭ থেকে ১০ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে বলে জানা গিয়েছে।কাউন্টারপয়েন্ট (Counterpoint) সংস্থার রিসার্চ ডিরেক্টর তরুণ পাঠকের মতে চিপসেট সরবরাহের ঘাটতি আগামী দুই বা তার বেশী ত্রৈমাসিক জুড়ে স্মার্টফোনের উৎপাদন ও বিক্রিকে নিয়ন্ত্রণ করবে।

স্মার্টফোন উৎপাদনের খরচ বেড়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলি নিজেদের নিরুপায় হিসেবে তুলে ধরতে চাইছে। পরিস্থিতি নজরে রেখে এসময় কোনো সংস্থাই নতুন ডিভাইস লঞ্চের ব্যাপারে উদ্যোগী নয়। তাই স্মার্টফোন বিক্রিকে কেন্দ্র করে মন জিতে নেওয়া অফারেরও দেখা নেই, যা ক্রেতাদের মনকে অনেকাংশে প্রভাবিত করবে বলে বিশেষজ্ঞদের অভিমত।

কবে মিটবে চিপসেট সরবরাহের ঘাটতি ?

সরবরাহকারীদের উপর থেকে চাহিদার চাপ কমলে চিপসেটের বাজারে স্থিতাবস্থা আসতে পারতো। তবে সেটা সম্ভব হবে কিনা তা এখনই বলা যাচ্ছে না। অন্যদিকে চাহিদা ও যোগানের ভারসাম্য তৈরী হতে এখনো কিছুটা দেরী হবে। সেক্ষেত্রে চলতি বছরের শেষভাগ পর্যন্ত সরবরাহের সংকট বজায় থাকবে বলে শোনা যাচ্ছে।

অন্যদিকে 5G চিপসেটের সরবরাহজনিত ঘাটতি মিটতে তুলনামূলকভাবে কম সময় লাগবে বলে অনেকে বলছেন। তবে এ ব্যাপারে নিশ্চিতভাবে কিছু দাবী করা অনুচিত হবে। যদিও আগামীদিনের চিপসেট সরবরাহের ক্ষেত্রে যে স্মার্টফোন প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলির দাবীকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে সেটা স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।

রিয়েলমি ইন্ডিয়ার সিইও মাধব শেঠের মতে চিপসেটের ঘাটতি স্মার্টফোন উৎপাদনের পক্ষে রীতিমতো চ্যালেঞ্জের ব্যাপার। এক্ষেত্রে স্থিতাবস্থা দেখার জন্য আমাদের আগামী বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিক পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।

হোয়াটসঅ্যাপে খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন