Drone: বায়ুমণ্ডলীয় তথ্য সংগ্রহে যুগান্তকারী পরিবর্তন, বেলুনের পরিবর্তে ড্রোন ব্যবহার করবে ভারত
বায়ুমণ্ডলীয় তথ্য সংগ্রহের জন্য অতি দ্রুত ড্রোন প্রযুক্তি ব্যবহারের কথা ভাবছে ভারত। আজ্ঞে হ্যাঁ, বর্তমানে সেন্সর সমন্বিত বেলুন আকাশে পাঠিয়ে বায়ুমণ্ডলীয় জরুরি তথ্য সংগ্রহের রীতি থাকলেও, আগামীতে এর পরিবর্তন হতে পারে। তখন ওয়েদার বেলুন নয়, বরং তার পরিবর্তে ড্রোনই হয়ে উঠতে পারে বায়ুমণ্ডল সম্পর্কিত তথ্য জোগাড়ের চাবিকাঠি। এই লক্ষ্যে দেশের আবহবিদ্যা বিভাগ আপাতত পরীক্ষা-নিরীক্ষার কাজে ব্যস্ত রয়েছে।
অবগতির জন্য জানিয়ে রাখি, এই মুহূর্তে দেশের আবহবিদ্যা বিভাগ প্রায় ৫৫টি ভিন্ন ভিন্ন অবস্থান থেকে সেন্সরযুক্ত ওয়েদার বেলুন আকাশে ভাসিয়ে বায়ুমণ্ডলীয় তথ্য জোগাড় করে থাকে। এভাবে দিনে দু'বার করে ওয়েদার বেলুন শূন্যে ভাসানো হয়। এই ধরনের বেলুনে রেডিওসোণ্ড সমন্বিত থাকে, যা আদতে এক ধরনের টেলিমেট্রি যন্ত্রাংশ। একে কাজে লাগিয়ে আবহবিদ্যা বিভাগ বায়ুমণ্ডলের চাপ, উষ্ণতা ছাড়াও বায়ুপ্রবাহের অভিমুখ ও গতি সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করে। উল্লেখ্য, হাইড্রোজেন পূর্ণ এই ভাসমান বেলুনগুলি প্রায় ১২ কিলোমিটার উচ্চতা পর্যন্ত উঠতে পারে এবং রেডিও সিগন্যালের মাধ্যমে সেখান থেকেই গৃহীত তথ্য সমতলে অবস্থিত কেন্দ্রে প্রেরণ করে।
কিন্তু একদিক দিয়ে রেডিওসোণ্ড সমন্বিত ভাসমান বেলুনগুলি ব্যবহার করা অত্যন্ত অসুবিধাজনক। একবার শূন্যে ভাসানোর পর আবহাওয়া কেন্দ্রগুলি এহেন বেলুনকে উদ্ধার করতে পারে না। সেক্ষেত্রে বায়ুমন্ডল সম্পর্কিত তথ্য জোগাড়ের কাজে ড্রোনের ব্যবহার শুরু হলে শেষোল্লিখিত অসুবিধার নিরসন হতে পারে। আবহাওয়ার পূর্বাভাস প্রদানের ক্ষেত্রেও এহেন ব্যবস্থা উপযোগী হবে বলে কেন্দ্রীয় ভূবিজ্ঞান মন্ত্রকের পক্ষে সেক্রেটারি এম রবিচন্দ্রন জানিয়েছেন।
অবশ্য শুধু ভূবিজ্ঞান মন্ত্রক নয়, একইসাথে নানা গবেষণাতেও বায়ুমণ্ডলের তথ্য হাতে পেতে অত্যাধুনিক ড্রোন প্রযুক্তি ব্যবহারের প্রসঙ্গ উঠে এসেছে। গবেষণায় বলা হয়েছে যে আলোচ্য ধরনের তথ্য সংগ্রহের ক্ষেত্রে ড্রোনের ব্যবহার ভাসমান বেলুনের থেকেও বেশি কার্যকর হতে পারে। কারণ সাধারণ অবস্থায় ড্রোনগুলিকে ভূমি থেকেই নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। তাছাড়া এরা নিম্ন ও উচ্চ - দুই ধরনের অবস্থানে পৌঁছতে সক্ষম। একারণে ড্রোন প্রযুক্তি ব্যবহার করে নিম্ন উচ্চতার পাশাপাশি, অনেকটা বেশি উচ্চতা থেকেও বায়ুমণ্ডল সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করা যায়।
এছাড়াও আলোচ্য কাজে ড্রোনের ব্যবহার খরচের দিক থেকে অনেকটাই সাশ্রয়ী হতে পারে। উপরন্তু এদের কাজে লাগানো এবং পুনরুদ্ধার করাও অপেক্ষাকৃত সহজ। তাই ভবিষ্যতে সবদিক থেকেই আলোচ্য ক্ষেত্রে ড্রোন ব্যবহারের সম্ভাবনা ক্রমশ বাড়ছে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, যেখানে একটি ওয়েদার বেলুন প্রায় ২ ঘন্টা বাতাসে ভেসে থাকতে সক্ষম, সেখানে প্রতিটি ড্রোন ভেসে থাকা অবস্থায় সবথেকে বেশি ৪০ মিনিট পর্যন্ত তথ্য জোগাড় করতে পারে।