Father’s Day: ফাদার্স ডে-তে বাবাকে শিখিয়ে দিন এই সব টিপস, যা অনলাইনের যুগে জেনে রাখা খুব জরুরি

আজ অর্থাৎ ১৯ জুন দিনটি ক্যালেন্ডারের পাতায় Father’s Day হিসাবে চিহ্নিত আছে। এই দিন প্রত্যেক সন্তান তাদের আদরের বাবা বা পিতৃস্থানীয় মানুষগুলিকে সশরীরে বা ডিজিটালি অভিনন্দন জানিয়ে থাকেন। আর যেহেতু আট থেকে আশি প্রতিটি প্রজন্মের মোবাইলেই এখন Whatsapp আছে, সেহেতু উক্ত ইনস্ট্যান্ট মেসেজিং প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমেই বেশিরভাগ মানুষ এই পিতৃ দিবসে ডিজিটাল-বার্তা পাঠাবেন। তবে এই অ্যাপ্লিকেশন একাধারে মানুষে মধ্যে যোগাযোগের সেতু যেমন তৈরী করেছে, তেমনই ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হওয়ার দরুন হ্যাকার বা জালিয়াতদের বেআইনি কারসাজির ঘাঁটিও হয়ে উঠেছে। ফলে, টেকনোলজি সম্পর্কে অজ্ঞাত ‘সিনিয়র সিটিজেন’ ব্যক্তিদের যথেষ্ট সচেতনতার সাথে উক্ত প্ল্যাটফর্মটি ব্যবহার করা উচিত। কেননা, আমাদের অভিভাবকেরা যদি কোনো ভাবে ভুয়ো মেসেজের ফাঁদে পড়ে যান, তবে তাদের যাবতীয় ব্যক্তিগত ফাঁস হয়ে যাবে হ্যাকারদের কাছে। তাই এই ফাদার্স ডে উপলক্ষে আমরা ‘টেক-স্যাভি’ (tech-savvy) নন এমন বাবাদের সাহায্য করার জন্য, সাবধানতার সাথে WhatsApp ব্যবহারের কয়েকটি বিশেষ টিপস ও কৌশল সম্পর্কে জানাবো। এগুলি অনুসরণ করলে আপনাদের বাবা এবং মায়েরা নিশ্চিন্তে তথা নিরাপত্তার সাথে ডিজিটালি অ্যাক্টিভ থাকতে পারবেন।

সাবধানতার সাথে WhatsApp ব্যবহারের টিপস এবং কৌশল

ফরোয়ার্ড মেসেজ ফিচার সচেতনতার সাথে ব্যবহার করুন

‘মেসেজ ফরোয়ার্ড করার আগে দুবার ভাবুন’ (Think twice before forwarding messages) – হোয়াটসঅ্যাপ বর্তমানে তাদের সমস্ত ফরোয়ার্ড করা মেসেজের জন্য এই লেবেলটি তৈরি করেছে। একই সাথে, কোনো কনটেন্ট বা মেসেজ শেয়ার করার আগে ব্যবহারকারীদের পুনর্বিবেচনা করার পরামর্শও দেওয়া হচ্ছে। আর এমনটা করার জন্য উৎসাহিত করতে মেসেজ ফরোয়ার্ডের সংখ্যা সীমিত করে দেওয়া হয়েছে হোয়াটসঅ্যাপের পক্ষ থেকে। যার দরুন, আমাদের অভিভাবকদের কাছে কোনো ভুয়ো মেসেজ এলে, তা তারা কন্টাক্টসে থাকা প্রত্যেককে পাঠাতে পারবেন না। তবে, টেকনোলজি সম্পর্কে অজ্ঞাত প্রত্যেক পিতা-মাতাকেই ফরোয়ার্ড মেসেজ ফিচার সম্পর্কে সচেতন করা দরকার। অর্থাৎ, মেসেজে থাকা তথ্য সত্যি কিনা তা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত কোনো মেসেজ শেয়ার করা উচিত নয় বলে তাদের বোঝাতে হবে। কেননা, মেসেজের উৎস না জেনে তা ফরোয়ার্ড করার ফলে অন্যান্য ব্যক্তি ভোগান্তির শিকার হতে পারেন।

ভুল তথ্যের বিস্তার রুখবে ফ্যাক্ট-চেকিং মেসেজ

ভারতে, ১০টি স্বাধীন ফ্যাক্ট-চেকিং সংস্থা রয়েছে, যা হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারকারীদের কাছে আসা মেসেজের তথ্য ‘আইডেন্টিফাই’, ‘রিভিউ’ এবং ‘ভ্যারিফাই’ করতে সাহায্য করে। এই পদ্ধতির মাধ্যমে উক্ত মেসেজিং প্ল্যাটফর্মে ভুল তথ্যের বিস্তার রোধ করা সম্ভব। উপরন্তু, হোয়াটসঅ্যাপ তাদের ব্যবহারকারীদের যেকোনো মেসেজ বা তথ্য যাচাই করার জন্য ‘দ্য পয়েন্টের ইনস্টিটিউট’ (The Poynter Institute) এর IFCN WhatsApp চ্যাটবক্সে টেক্সট পাঠিয়ে যাচাই করার সুবিধাও প্রদান করে থাকে। যার দরুন, কোনো মেসেজ ফরওয়ার্ড করার বা তাতে থাকা কোনো লিঙ্ক ওপেন করার আগে আপনাদের বাবারা উল্লেখিত সাইটে গিয়ে তা যাচাই করে নিতে পারবেন এবং সাইবার জালিয়াতির শিকার হওয়ার থেকে সুরক্ষিত থাকবেন।

নিরাপত্তার জন্য টু-স্টেপ ভেরিফিকেশন এনাবল করুন

হোয়াটসঅ্যাপে টু-স্টেপ ভেরিফিকেশন নামের একটি সিকিউরিটি ফিচার আছে, যা অ্যাকাউন্টে দ্বিগুন নিরাপত্তা-স্তর যোগ করে থাকে। অ্যাপ সেটিংসে গিয়ে এই ফিচারকে এনাবল করে দিলে, ব্যবহারকারীরা যখন তাদের অ্যাকাউন্ট রিসেট ও ভ্যারিফাই করবেন, তখন তাদের একটি ছয়-সংখ্যার পিন এন্টার করতে বলা হবে। তাই, আপনাদের অভিভাবকের ফোন চুরি হয়ে গেলে, এই ফিচার কোনো অসৎ ব্যক্তিকে তার হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্ট অ্যাক্সেস করতে দেবে না।

প্রয়োজনে অ্যাকাউন্ট ব্লক এবং রিপোর্ট করুন

হোয়াটসঅ্যাপ তাদের প্ল্যাটফর্মে অ্যাকাউন্ট রিপোর্ট ও ব্লক করার সুবিধা প্রদান করে থাকে। যদি কোনো ব্যক্তি বারংবার বিরক্তিকর মেসেজ পাঠাতে থাকে, তবে তার অ্যাকাউন্টটি রিপোর্ট বা ব্লক করার ক্ষমতা ব্যবহারকারীদের হাতেই রয়েছে। উপরন্তু, হোয়াটসঅ্যাপে এখন রিপোর্ট করা মেসেজ সেভ রাখার বিকল্পও উপলব্ধ। যার দরুন ব্যবহারকারীরা ফ্যাক্ট-চেকার সাইট বা ‘ল এনফোর্সমেন্ট অফিসিয়ালস’ এর সাথে এই সকল মেসেজ শেয়ার ও তাতে থাকা তথ্য ভ্যারিফাই করতে পারবেন।

ব্যক্তিগত কথোপকথন নিজের অবধি সীমাবদ্ধ রাখুন

হোয়াটসঅ্যাপে ‘ডিসাপেয়ারিং মেসেজ’ (Disappearing Messages) নামের একটি ফিচার আছে, যা এনাবল করার মাধ্যমে পার্সোনাল বা গ্রুপ চ্যাটে প্রেরিত মেসেজগুলি নির্বাচিত সময় পর আপনা থেকে অদৃশ্য হয়ে যায়। এই রকমই আরেকটি বিকল্প হল ‘ভিউ ওয়ান্স’ (View Once) ফিচার, যা প্রেরিত ফটো এবং ভিডিওগুলিকে একবার ওপেন করা মাত্রই বরাবরের জন্য মুছে ফেলে চ্যাটবক্স থেকে। ফলে, এই দুটি অপশনের মাধ্যমে অভিভাবকেরা তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট বা পরিচয় পত্রের বিশদ সংক্রান্ত ব্যাক্তিগত তথ্যাদি গোপনে আপনাদের সাথে শেয়ার করতে পারবেন। আর নির্ধারিত সময় পর যাবতীয় মেসেজ ও কনটেন্ট ডিলিট হয়ে যাওয়ায়, মোবাইল চুরি গেলেও তথ্য ফাঁসের কোনো আশঙ্কা থাকবে না।

প্রাইভেসি সেটিংসের সাথে গোপনীয়তা বজায় রাখুন

হোয়াটসঅ্যাপে আপলোড করা প্রোফাইল পিকচার বা স্ট্যাটাস কন্টাক্টসে থাকা কিছু সংখ্যক ব্যক্তিদের মধ্যে সীমিত থাকবে, নাকি সকলেই তা দেখতে পারবেন সেই বিকল্পও উক্ত মেসেজিং প্ল্যাটফর্মে উপলব্ধ। আবার আপনার ‘লাস্ট সিন’ কারা কারা দেখতে পারবে সেটিও নিয়ন্ত্রন করার ক্ষমতা ব্যবহারকারীদের হাতে দিয়ে দেওয়া হয়েছে। আপনারা নিজেদের সুবিধা মতো প্রাইভেসি-লেভেল সেট করার জন্য – এভরিওয়ান (everyone), কন্টাক্টস ওনলি (contacts only), সিলেক্ট কন্টাক্টস (select contacts) এবং নো ওয়ান (no one) এই চারটি বিকল্পের মধ্যে একটিকে সেটিংসে গিয়ে বেছে নিতে পারেন।