সাময়িক স্বস্তি পেল Xiaomi, ৫৫০০ কোটি টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্তকরণে স্থগিতাদেশ হাইকোর্টের

বিপদের মধ্যেই সাময়িক স্বস্তির হাওয়া! ইডি’র (ED) তদন্তকারীদের নির্দেশে চীনা স্মার্টফোন প্রস্তুতকারক কোম্পানি শাওমি (Xiaomi) -র প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার কোটি (5551 cr) টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্তকরণে এবার স্থগিতাদেশ ঘোষণা করলো কর্ণাটক হাইকোর্ট। গত বৃহস্পতিবার, ৫ই মে, ইডি’র বিরুদ্ধে দায়ের করা Xiaomi -র মামলায় প্রাথমিক রায় হিসেবে কর্ণাটক হাইকোর্ট উক্ত স্থগিতাদেশ দিয়েছে। ফলে শুনানির পরবর্তী তারিখ অর্থাৎ ১২ই মে, ২০২২ -এর আগে ইডি (ED) কোনওভাবেই Xiaomi -র সম্পদ বাজেয়াপ্ত করতে পারবেনা।

কর ফাঁকি দিতে গিয়ে আইনভঙ্গ, ED -র তদন্তে বেকায়দায় Xiaomi India

আসলে স্মার্টফোন বিক্রির নিরিখে দেশের এক নম্বর ব্র্যান্ড হলেও শাওমি’র (Xiaomi) পক্ষে সময়টা একেবারেই ভালো যাচ্ছেনা। সম্প্রতি নিয়মবহির্ভূতভাবে ভারতের বাইরে আনুমানিক সাড়ে পাঁচ হাজার কোটি টাকা চালানের অপরাধে ইডি বা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট, সংস্থাটির ৫,৫৫১ কোটি টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দেয়। দীর্ঘ তদন্তের পরেই ইডি’র সদস্যেরা শাওমি’র বিরুদ্ধে এই পদক্ষেপ গ্রহণের কথা ঘোষণা করে। তদন্তকারীদের অভিযোগ, মূলত কর ফাঁকি দিতে গিয়েই Xiaomi উক্ত বিপুল পরিমাণ অর্থ বিদেশে তার তিন প্যারেন্ট সংস্থার অ্যাকাউন্টে চালান করে। এর দ্বারা আলোচ্য সংস্থাটি ফেমা (FEMA, 1999) অর্থাৎ ফরেন এক্সচেঞ্জ ম্যানেজমেন্ট অ্যাক্ট লঙ্ঘন করে, যেটি নিঃসন্দেহে শাস্তিযোগ্য অপরাধ। যদিও এক্ষেত্রে চীনা স্মার্টফোন প্রস্তুতকারক সংস্থাটি (শাওমি) নিজেদের নির্দোষ বলে দাবি করেছে।

বেআইনিভাবে অর্থ স্থানান্তরের অভিযোগ অস্বীকার Xiaomi -র

কর্ণাটক হাইকোর্ট ইডি’র সিদ্ধান্তে সাময়িক স্থগিতাদেশ দিতেই শাওমি’র পক্ষ থেকে দাবি করা হয় যে বেআইনিভাবে নয় বরং নিয়ম মেনেই তারা রয়্যালটির টাকা তিন প্যারেন্ট কোম্পানির অ্যাকাউন্টে প্রেরণ করেছে। এক্ষেত্রে ব্যাঙ্ক মারফত তাদের প্রতিটি আদানপ্রদান নির্ভুল ও স্বচ্ছ বলেও সংস্থার বক্তব্য। শাওমি’র তরফে তাদের আইনজীবী মহামান্য আদালতে উক্ত বয়ান পেশ করলে, বিচারপতি অনির্দিষ্টকালের জন্য ইডি’র সিদ্ধান্তে স্থগিতাদেশ জারি করে।

এদিকে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের দাবি, তিনটি প্রতিষ্ঠানের অ্যাকাউন্টে বিপুল পরিমাণ অর্থ পাঠালেও শাওমি সেই সংস্থাগুলির তরফ থেকে কোনও পরিষেবা গ্রহণ করেনি। এভাবে কোনও কারণ ছাড়া দেশের বাইরে অর্থ চালান সন্দেহের উদ্রেক ঘটায়। আর সে কারণেই ইডি ২০২১ সাল থেকেই শাওমি’র বিরুদ্ধে তদন্তে নেমে পড়ে যা সম্প্রতি চীনা সংস্থাটিকে বেশ মুশকিলে ফেলেছে।

উল্লেখ্য, ২০১৪ সালে Xiaomi প্রথমবারের জন্য ভারতীয় স্মার্টফোনের বাজারে প্রবেশ করে। বর্তমানে এই চীনা কোম্পানি দেশের সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় স্মার্টফোন ব্র্যান্ড। এই মুহূর্তে দেশীয় স্মার্টফোন বাজারের ২৪ শতাংশ Xiaomi -র দখলে রয়েছে। এছাড়া বর্তমানে দেশে সংস্থাটির বার্ষিক টার্নওভার প্রায় ৩৪,০০০ কোটি টাকা।