সামান্য অসতর্ক হলেই অনলাইনে জালিয়াতির শিকার হবেন, সুরক্ষিত থাকার উপায় জানাল Google

যত দিন যাচ্ছে, ততই পাল্লা দিয়ে উন্নত হচ্ছে টেকনোলজি, আর সেইসাথে বৃদ্ধি পাচ্ছে হ্যাকারদের বাড়বাড়ন্ত। অর্থাৎ খুব সহজে বললে, প্রযুক্তির উন্নতি মানুষের জীবনে আশীর্বাদের পাশাপাশি এখন অভিশাপ হয়েও দেখা দিচ্ছে। নিত্যনতুন উদ্ভাবনী ফন্দিফিকির আবিষ্কার করে হ্যাকাররা এখন সবরকম অসম্ভবকে সম্ভব করে ফেলছে, আর ফলস্বরূপ প্রতারিত হচ্ছে বহুসংখ্যক সাধারণ মানুষ। হ্যাকাররা এখন সংক্রামক মেসেজ বা ইমেইলের মাধ্যমে ম্যালওয়্যার প্রবেশ করিয়ে ইউজারদের স্মার্টফোন হ্যাক করছে এবং তাদের ব্যক্তিগত তথ্য সহ বিভিন্ন প্রয়োজনীয় ডেটা এবং কষ্টার্জিত অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে।

ইদানীংকালে ইমেইল স্ক্যামের ঘটনা আর আমাদের কারোরই অজানা নয়। ম্যালিশিয়াস লিঙ্কযুক্ত ইমেইল পাঠিয়ে ইউজারদের প্রতারিত করছে হ্যাকাররা। ইমেইলে এমন কিছু বলা থাকছে যা ইউজারদের সেই ম্যালিশিয়াস লিঙ্কে ক্লিক করতে প্রলুব্ধ করছে, আর তার ফলটা যে কী হচ্ছে তা তো আমাদের সকলেরই জানা। আসলে এই মেইলগুলি ব্যাংক বা এই জাতীয় কোনো বৈধ প্রতিষ্ঠানের নাম দিয়ে পাঠানো হয়। ফলে ইউজারদের কাছে সন্দেহের কোনো অবকাশই থাকে না, আর এই সুযোগটিকে কাজে লাগিয়েই হ্যাকাররা তাদেরকে সাইবার জালিয়াতির শিকার হতে বাধ্য করছে।

ইতিমধ্যেই অনেক ব্যবহারকারী এই ধরনের ইমেইলের লিঙ্কগুলিতে ক্লিক করে তাদের কষ্টার্জিত অর্থ হারিয়েছেন। পাশাপাশি স্মার্টফোন হ্যাকিংয়ের ফলে অন্যান্য বড়োসড়ো বিপদের সম্মুখীনও হয়েছেন বহুসংখ্যক মানুষ। তাই জনসাধারণকে সতর্ক করতে এবার মাঠে নেমেছে টেক জায়েন্ট Google। তারা এই ধরনের ফিশিং স্ক্যাম এবং এর থেকে কীভাবে সাধারণ মানুষকে সতর্ক থাকতে হবে, সে সম্পর্কে বিশদে জানিয়েছে। এই প্রতিবেদনে আমরা সেই সমস্ত কথাগুলিই আপনাদেরকে জানাতে চলেছি।

ফিশিং কী?

গুগলের মতে, যদি কেউ বিভিন্নরকম সাইবার জালিয়াতির মাধ্যমে ইউজারদের ব্যক্তিগত তথ্য ও কষ্টার্জিত অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে, তখন সেই ঘটনাকে ফিশিং অ্যাটাক বলা হয়। এই অ্যাটাক সাধারণত ইমেইল, বিজ্ঞাপন বা ইউজারদের বহুল পরিচিত সাইটগুলির মাধ্যমে ঘটে থাকে। ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্য হাতিয়ে নেওয়াই হল হ্যাকারদের মূল উদ্দেশ্য। তাই এমন কিছু গোপন পার্সোনাল ডিটেলস আছে যা কখনোই অনলাইনে শেয়ার করা উচিত নয়। সেগুলি কী কী তার একটি তালিকাও গুগল প্রকাশ করেছে এবং নীচে সেগুলি উল্লেখ করা হল:

  • পাসওয়ার্ড পরিবর্তন না হওয়া পর্যন্ত, ইউজারনেম এবং পাসওয়ার্ড
  • সোশ্যাল সিকিউরিটি স্কিম নম্বর
  • ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নম্বর
  • পিন
  • ডেবিট এবং ক্রেডিট কার্ড নম্বর
  • আপনার মায়ের নাম
  • আপনার জন্মদিন

সবসময় মনে রাখবেন যে Gmail, Amazon, Flipkart সহ কোনো ব্যাঙ্ক আপনার কাছ থেকে এই ধরনের কোনো পার্সোনাল ডিটেলস কখনোই জানতে চাইবে না। তাই যদি কেউ এই ধরনের কোনো তথ্য আপনার কাছ থেকে নেওয়ার চেষ্টা করে, তাহলে নির্দ্বিধায় বুঝে নিন যে নিশ্চয়ই কোনোরকম গণ্ডগোল আছে এবং তৎক্ষণাৎ তার সাথে যোগাযোগ সম্পূর্ণরকমভাবে বিচ্ছিন্ন করে দিন। পাশাপাশি আপনার ইমেইলে যদি এমন কোনো মেইল পান যেখানে এই ধরনের কোনো তথ্য আপনাকে শেয়ার করতে বলা হচ্ছে, তাহলে অবিলম্বে সেগুলি ডিলিট করে ফেলুন। মনে রাখবেন, যথাযথ সতর্কতা অবলম্বন করাই হল এই ধরনের সাইবার জালিয়াতির হাত থেকে বাঁচার এক এবং একমাত্র উপায়।

হোয়াটসঅ্যাপে খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন