পাগলপ্রেমী! iPhone 15 কিনতে আহমেদাবাদ থেকে মুম্বাই এলেন এক ব্যক্তি, 17 ঘন্টা লাইন দিয়ে কিনলেন নতুন মডেল

iPhone 15 সিরিজের ফোন কিনতে উপচে পড়ছে ভিড়, ১৭ ঘন্টা লাইনে অপেক্ষা করতেও পিছপা হচ্ছে না ভারতীয়রা

ভারত সহ বিশ্বব্যাপী প্রায় প্রত্যেকটি গ্যাজেট প্রেমীই নয়া iPhone 15 সিরিজের লঞ্চের অপেক্ষায় ছিলেন। অবশেষে গত ১২ই সেপ্টেম্বর আলোচ্য লাইনআপকে সাড়ম্বরে উন্মোচন করা হয় বিশ্ব বাজারে। আর প্রতিশ্রুতি মতো গতকাল অর্থাৎ ২২শে সেপ্টেম্বর থেকে নতুন Apple ব্র্যান্ডের ফোনগুলির সেল শুরু হয়। যারপর Apple প্রোডাক্ট অনুরাগীদের একাধিক কর্মকান্ড সামনে আসছে। জানা গেছে মুম্বাই ও দিল্লির Apple স্টোরে iPhone 15 সিরিজের ফোন কেনার জন্য আগেরদিন মধ্যরাত থেকে ভিড় জমিয়েছে ক্রেতারা।

এমনকি, এক ব্যক্তি আহমেদাবাদ থেকে মুম্বাইয়ে সফর করেছেন শুধুমাত্র আইফোন কেনার জন্য। মুম্বাইয়ের বান্দ্রা-কুরলা কমপ্লেক্সে (BKC) অবস্থিত Apple স্টোরের বাইরে দীর্ঘ ১৭ ঘন্টা লাইনে দাঁড়ানোর পর ব্যক্তিটি নিজের পছন্দের আইফোন হাতে পেয়েছেন।

আহমেদাবাদ থেকে মুম্বাইয়ে এলেন iPhone 15 সিরিজের ফোন কিনতে উৎসাহী এক ব্যক্তি

ওই অ্যাপল প্রোডাক্ট প্রেমী জানিয়েছেন, “গতকাল দুপুর ৩টে থেকে আমি এখানে অর্থাৎ ভারতের প্রথম অ্যাপল স্টোরের কাছে দাঁড়িয়ে আছি। ১৭ ঘন্টা ধরে লাইনে থাকার পর iPhone 15 Pro Max হোয়াইট টাইটানিয়াম ২৫৬ জিবি স্টোরেজ ভ্যারিয়েন্ট আমার হাতে এসেছে।” যদিও এতো খাটাখাটনির পরও ক্লান্তির রেশ টুকু ছিল না এই ব্যক্তির মুখে, বরং নতুন আইফোন কেনার খুশি ঝলক দিচ্ছিলো।

আহমেদাবাদ নিবাসী এই আইফোন ক্রেতা অ্যাপল ব্র্যান্ডের প্রতি কতটা নিবেদিত সেই প্রমানও পাওয়া গেছে তার বক্তব্যে। জানা গেছে, ব্যক্তিটি iPhone 15 Pro Max -এর পাশাপাশি সদ্য লঞ্চ হওয়া Apple Watch Ultra 2 এবং AirPods মডেল দুটিকেও প্রি-অর্ডার করেছেন। অ্যাপল প্রোডাক্ট কেন এতটা পছন্দ জিজ্ঞেস করা হলে, তার এক কথার উত্তর হল – “অ্যাপল সেরা।”

উল্লেখযোগ্যভাবে, একইরকম উত্তেজনা অ্যাপলের BKC স্টোরে আসা বিবেক নামের আরেক ব্যক্তির মধ্যেও দেখা গেছে। বিবেক জানিয়েছেন, তিনি ভোর ৪টে থেকে BKC স্টোরে এসে লাইন দিয়েছিলেন। পছন্দের আইফোন হাতে পাওয়ার পর তার প্রতিক্রিয়া, “আমি খুবই খুশি ও উত্তেজিত নতুন আইফোন ১৫ প্রো (iPhone 15 Pro) কিনতে পেরে। আমি সারা বছর এই মুহূর্তের জন্যই অপেক্ষা করেছিলাম।”

স্বপ্নের মহানগরী মুম্বাই -এর পাশাপাশি ‘ভারতের দিল’ দিল্লি -তেও আইফোন ক্রেতাদের উচ্ছ্বাস খুব একটা কম ছিল না। দিল্লির সাকেতে ১০,০০০ বর্গফুট এলাকা জুড়ে অবস্থিত অ্যাপল স্টোরে এসে রাহুল জানিয়েছেন, তিনি গতকাল ভোর ৪টের সময়ে স্টোরে উপস্থিত হয়েছিলেন। সাকেত স্টোরের প্রথম ক্রেতা হিসাবে সর্বপ্রথম আইফোন ১৫ (iPhone 15) পকেটস্থ করতে পেরে তিনি যে কতটা গর্বিত তা তার কথাতেই স্পষ্ট ধরা পড়েছে। রাহুল আরো জানিয়েছেন যে – “আমার কাছে ইতিমধ্যেই আইফোন ১৩ প্রো ম্যাক্স (iPhone 13 Pro Max) এবং আইফোন ১৪ প্রো ম্যাক্স (iPhone 14 Pro Max) আছে। আইফোন ১৫ সিরিজ ঘোষণা করার পরেই মনস্থির করে নিয়েছিলাম যে সকলের আগে আইফোন ১৫ প্রো ম্যাক্স (iPhone 15 Pro Max) কিনতে হবে আমাকে।”

প্রসঙ্গত, আইফোন ১৫ সিরিজ গত ১৫ই সেপ্টেম্বর থেকে ভারতে প্রি-অর্ডারের জন্য উপলব্ধ ছিল। আর গতকাল সংস্থার আধিকারিক রিটেল স্টোর ও বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে সিরিজের সমস্ত মডেলগুলির বিক্রি শুরু হয়।

ভারতে Apple iPhone 15 সিরিজের প্রত্যেকটি মডেলের দাম

iPhone 15 এর দাম

এদেশে অ্যাপল আইফোন ১৫ মডেলের ১২৮ জিবি স্টোরেজ যুক্ত বেস ভ্যারিয়েন্টের দাম রাখা হয়েছে ৭৯,৯০০ টাকা। আর উচ্চতর ২৫৬ জিবি ও ৫১২ জিবি স্টোরেজ অপশনকে যথাক্রমে ৮৯,৯০০ টাকা এবং ১,০৯,৯০০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে।

iPhone 15 Plus এর দাম

অ্যাপল আইফোন ১৫ প্লাস মডেলটিকেও তিনটি স্টোরেজ কনফিগারেশনে লঞ্চ করা হয়েছে। এক্ষেত্রে বেস ১২৮ জিবি, ২৫৬ জিবি এবং টপ-এন্ড ৫১২ জিবি স্টোরেজ ভ্যারিয়েন্টের দাম যথাক্রমে ৮৯,৯০০ টাকা, ৯৯,৯০০ টাকা ও ১,১৯,৯০০ টাকা ধার্য করা হয়েছে।

উল্লেখিত দুটি নন-প্রো আইফোন মডেলকেই – ব্ল্যাক, গ্রীন, ব্লু, ইয়েলো ও পিঙ্ক কালারে লঞ্চ করা হয়েছে।

iPhone 15 Pro এর দাম

অ্যাপল আইফোন ১৫ প্রো মডেলের দাম শুরু হচ্ছে ১,৩৪,৯০০ টাকা থেকে। এই বিক্রয় মূল্যে এর ১২৮ জিবি স্টোরেজ যুক্ত বেস ভ্যারিয়েন্টের। আর উচ্চতর ২৫৬ জিবি, ৫১২ জিবি এবং ১ টেরাবাইট স্টোরেজ বিকল্পগুলি কিনতে যথাক্রমে ১,৪৪,৯০০ টাকা, ১,৬৪,৯০০ টাকা ও ১,৮৪,৯০০ টাকা খরচ করতে হবে।

iPhone 15 Pro Max এর দাম

অ্যাপল আইফোন ১৫ প্রো ম্যাক্স হল সিরিজের সবথেকে টপ-এন্ড মডেল, এটি মোট তিনটি স্টোরেজ অপশনের সাথে এসেছে। যার মধ্যে ২৫৬ জিবি স্টোরেজ যুক্ত বেস ভ্যারিয়েন্টের দাম ১,৫৯,৯০০ টাকা ধার্য করা হয়েছে। এছাড়া ৫১২ জিবি এবং ১ টেরাবাইট স্টোরেজ অপশনের দাম থাকছে যথাক্রমে ১,৭৯,৯০০ টাকা ও ১,৯৯,৯০০ টাকা।

আলোচ্য দুটি প্রো মডেল – ব্ল্যাক টাইটেনিয়াম, হোয়াইট টাইটেনিয়াম, ন্যাচেরাল টাইটেনিয়াম ও ব্লু টাইটেনিয়াম কালার বিকল্পে এসেছে।