ফের ভারতসেরা স্মার্টফোন ব্র্যান্ড Xiaomi, শিপমেন্টে রেকর্ড গড়লো Realme

সাপ্লাই চেইনের সীমাবদ্ধতার কারণে চলতি বছরের প্রথম কোয়ার্টারে (Q1) ভারতীয় স্মার্টফোন বাজার কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছিল। যার দরুন গত জানুয়ারি থেকে মার্চ মাসের মধ্যে স্মার্টফোন শিপমেন্টের হার মাত্র ২% বৃদ্ধি পেয়েছে বলে মার্কেট রিসার্চ ফার্ম ক্যানালিস (Canalys) তাদের একটি সাম্প্রতিক রিপোর্টে দাবি করেছে। এদিকে সামগ্রিক চালান-প্রক্রিয়ায় মন্দা দেখা দিলেও, ভারতে স্মার্টফোন রপ্তানির সিংহভাগ এসেছে স্মার্টফোন ব্র্যান্ড Xiaomi এর থেকে। অন্যদিকে, দ্বিতীয় স্থান দখলে সক্ষম হয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া ভিত্তিক টেক জায়ান্ট Samsung। শিপমেন্টের ক্ষেত্রে একধাপে ৪০% ইয়ার-অন-ইয়ার বা YoY গ্রোথ রেকর্ড করার মাধ্যমে Realme তৃতীয় স্থান অধিকার করেছে। Vivo এবং Oppo এই তালিকায় যথাক্রমে চতুর্থ এবং পঞ্চম স্থানে আছে। এক্ষেত্রে, ক্যানালিস তাদের রিপোর্টে বলেছে সাপ্লাই চেইনের ব্যাঘাতের কারণে Xiaomi এবং Vivo -এর মতো শীর্ষস্থানীয় স্মার্টফোন ব্র্যান্ডগুলি তাদের লো-এন্ড মডেলের চাহিদা মেটাতে বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে।

Realme সর্বোচ্চ শিপমেন্টের রেকর্ড করলেও শীর্ষস্থান এখনো Xiaomi এর দখলে

ক্যানালিসের রিপোর্ট অনুসারে, ২০২২ সালের প্রথম প্রান্তিকে ভারতে ৩৮ মিলিয়ন ইউনিট স্মার্টফোন চালান করা হয়েছে। যেখানে কিনা গত বছরের প্রথম কোয়ার্টারে ৩৭.১ মিলিয়ন স্মার্টফোন শিপমেন্ট রেকর্ড করা হয়েছিল। অর্থাৎ, গত বছরের তুলনায় এই বছর (প্রথম কোয়ার্টার) মাত্র ২% অধিক অ্যানুয়াল গ্রোথ দেখা গেছে।

সদ্য প্রকাশিত রিপোর্টে, মোট শিপমেন্ট পরিসংখ্যানের মধ্যে, চীনা স্মার্টফোন ব্র্যান্ড শাওমি চলতি বছরের প্রথম কোয়ার্টারে ৮ মিলিয়ন শিপমেন্টের সাথে ২৫% মার্কেট শেয়ার সহ ভারতে স্মার্টফোন চালানের সবচেয়ে বড় অবদানকারী ছিল বলে উল্লেখ করা হয়েছে। যদিও, তালিকায় শীর্ষস্থানে অবস্থান করলেও, সংস্থাটির অ্যানুয়াল শিপমেন্ট ২৪% কমে গেছে। এই একই কোয়ার্টারে, স্যামসাং ৬.৯ মিলিয়ন ইউনিট প্রেরণ করেছে ভারতে এবং ৬.৯% মার্কেট শেয়ার লাভ করেছে। শাওমির মতো স্যামসাংয়েরও YoY-গ্রোথে পতন দেখা গেছে। সেক্ষেত্রে, দক্ষিণ কোরিয়া ভিত্তিক সংস্থাটির প্রবৃদ্ধি ২% কমেছে।

অন্যদিকে, রিয়েলমি ভারতে জানুয়ারি থেকে মার্চের মধ্যে ৬ মিলিয়ন ডিভাইস প্রেরণ করেছে। শুধু তাই নয়, সাথে ১৬% মার্কেট শেয়ারের সাথে ৪০% অ্যানুয়াল গ্রোথও রেকর্ড করেছে। ভিভো, ৫.৭ মিলিয়ন ইউনিট শিপমেন্টের সাথে ১৫% মার্কেট শেয়ার পেয়েছে। আর, ওপ্পো ৪.৬ মিলিয়ন ইউনিটের শিপ করার মাধ্যমে ১২% মার্কেট শেয়ার লাভ করেছে। যদিও, ভিভো এবং ওপ্পো সংস্থার অ্যানুয়াল গ্রোথ বা বার্ষিক প্রবৃদ্ধি ২০২২ সালের প্রথম প্রান্তিকে যথাক্রমে ১৫% এবং ১৩% হ্রাস পেয়েছে বলে জানা গেছে৷

ক্যানালিসের এক বিশ্লেষক সানিয়াম চৌরাসিয়া, শাওমি এবং ভিভোর মতো শীর্ষস্থানীয় সংস্থাগুলির জন্য YoY-গ্রোথের পথে প্রধান বাঁধা বা চ্যালেঞ্জ হিসাবে সাপ্লাই চেইনকে দায়ী করেছেন৷ কেননা, এই ব্র্যান্ডগুলি তাদের ভলিউম-ড্রাইভিং লো-এন্ড মডেলগুলির জন্য কম্পোনেন্ট আয়ত্ত করতে ব্যর্থ হয়েছে৷ যেখানে কিনা, “রিয়েলমি, টেকনো এবং আইটেল, বাজারের নেতৃস্থানীয় সংস্থাগুলির সাথে লড়াই করার জন্য এবং প্রথম কোয়ার্টারে লো-এন্ড চাহিদা পূরণ করার জন্য সলিড সাপ্লাই নিশ্চিত করার মাধ্যমে উল্লেখযোগ্যভাবে ভাল পারফরম্যান্স দেখিয়েছে।” এমনটাই একটি বিবৃতিতে বলেছেন চৌরাসিয়া৷

তদুপরি, ২০২২ সালের মার্চ মাসে স্মার্টফোন বিক্রেতারা মার্কেট শেয়ারের সংখ্যা উন্নত করতে শুরু করেছে বলেও রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে। এক্ষেত্রে, ভারতের ছোট শহরগুলি এইসকল টেক সংস্থার জন্য প্রধান ‘ড্রাইভিং সোর্স’ হতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।

যাইহোক, ভারতে ক্রমবর্ধমান তেল এবং পাইকারি পণ্যের মূল্যস্ফীতির কারণে স্মার্টফোন সংস্থাগুলির জন্য সাশ্রয়ী মূল্যে ডিভাইস অফার করা যথেষ্ট ‘চ্যালেঞ্জিং’ হতে চলেছে৷ একই সাথে, “মুদ্রাস্ফীতির কারণে বিদেশী মুদ্রার হারে ত্তঠা-নামা এবং পরিচালন খরচ আরো উচ্চতর হয়ে গেছে। ফলস্বরূপ, মুনাফা বজায় রাখার জন্য বিক্রেতাদের উপর আরও চাপ সৃষ্টি হবে,” বলে মনে করছেন চৌরাসিয়া।