কৃষি বিলের সাথে যোগসূত্র নেই, পাঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্টের দ্বারস্থ Reliance Jio

গত কয়েক মাস ধরে, কৃষক আন্দোলনের প্রভাবে সরগরম সমগ্র ভারতবর্ষ। মোদী সরকারের বিতর্কিত কৃষি বিল প্রত্যাহারের দাবিতে, ইতিমধ্যে বহু কৃষিজীবি মানুষ রাস্তায় নেমেছেন বা বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। এদিকে, আন্দোলনের ক্ষোভের হাত থেকে রেহাই পায়নি মুকেশ আম্বানির মালিকানাধীন রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড। কেন্দ্র সরকার, এই সংস্থাটিকে বিশেষ সুবিধা পাইয়ে দিচ্ছে এই অভিযোগে কৃষকরা রিলায়েন্সের জিও সিম বয়কট করার ডাক দিয়েছেন। এমনকি পাঞ্জাবের বেশ কয়েকটি অঞ্চলে ভাঙচুর করা হয়েছে জিও-র সেল টাওয়ার। পরিস্থিতি এতটাই উত্তাল হয়েছে যে শেষমেষ সরকারী কর্তৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ চেয়ে পাঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড (RIL)।

সংস্থার বক্তব্য, বিক্ষোভকারীদের পদক্ষেপে কেবল RIL-এর অবকাঠামো, বিক্রয় বা পরিষেবা ক্ষতিগ্রস্ত এবং বিঘ্নিত হচ্ছে এমন না, উপরন্তু হাজার হাজার কর্মচারীর জীবন বিপন্ন হওয়ার আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে। তাদের সাথে ফার্ম আইন বা কৃষি বিলের কোনোরকম যোগসূত্র নেই। সেক্ষেত্রে, উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ব্যবসায়িক প্রতিদ্বন্দ্বীরা বিক্ষোভকারীদের প্ররোচিত ও সহায়তা করছে বলে দাবি করেছে রিলায়েন্স জিও। আর তাই দেশের শীর্ষস্থানীয় টেলিকম সংস্থাটি পাঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্টে একটি আবেদন করেছে।

সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া একটি বিবৃতিতে রিলায়েন্স বলেছে – রাজধানী শহরে চলতে থাকা কৃষক আন্দোলনের সুযোগ নিয়ে কিছু স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী নিজেদের অভিসন্ধী পূরণের জন্য রিলায়েন্সের বিরুদ্ধে অবিচ্ছিন্ন, বিদ্বেষপূর্ণ ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অভিযান শুরু করেছে; সংস্থার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের কোনো ভিত্তি নেই। অন্যদিকে, রিলায়েন্স জিও, কেন বা কিভাবে তার সাথে ফার্ম আইনেরর কোনো যোগসূত্র নেই – সেই তথ্য উল্লিখিত আবেদনে তুলে ধরেছে।

টেলিকম সংস্থাটি দাবি করেছে যে, রিলায়েন্স রিটেইল লিমিটেড (RRL), রিলায়েন্স জিও ইনফোকম লিমিটেড (RJIL), বা RIL – অতীতে বা বর্তমানে কোনো কৃষি ভিত্তিক “চুক্তি” করেনি বা ব্যবসায়িক প্রভাব বিস্তারের জন্য পাঞ্জাব, হরিয়ানা বা ভারতের অন্য কোথাও কোনও কৃষিজমি কেনেনি .ভবিষ্যতেও সংস্থার এই ধরণের কোনো পরিকল্পনা নেই বলেই জানিয়েছে রিলায়েন্স জিও।

এছাড়া, ওই আবেদনে আরো বলা হয়েছে যে RRL, সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে কোনো খাদ্যশস্য কেনেনা এবং সংস্থাটি, কোনো দীর্ঘমেয়াদী ক্রয় চুক্তিও করেনি। এমনকি তারা, সরবরাহকারীদের পারিশ্রমিকের চেয়ে কম মূল্যের বিনিময়ে কৃষকদের কাছ থেকে শস্য কেনার অনুরোধও করেনি।
শুধু তাই নয়, সংস্থাটি জানিয়েছে যে তারা ভারতীয় কৃষকদের উৎপাদিত শস্যের ন্যায্য এবং লাভজনক দাম পাওয়ার আকাঙ্ক্ষাকে সমর্থন করে। তাই সেল টাওয়ার ভাঙচুর বন্ধ করতে বা পরিস্থিতি সামাল দিতে সরকারি বা আইনি হস্তক্ষেপ চাইছে সংস্থাটি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *