ভাইরাল রশ্মিকা মান্দানার Deepfake ভিডিও, আশঙ্কিত অমিতাভ বচ্চন! ভয়ানক প্রযুক্তি বাড়াচ্ছে চিন্তা

ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে অভিনেত্রী রশ্মিকা মান্দানার ভুয়ো ডিপফেক ভিডিও। আতঙ্কিত তারকামহল থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ।

সাম্প্রতিক মাসগুলিতে স্মার্টফোন ও ইন্টারনেটের ওপর নির্ভরশীল সাধারণ মানুষের জন্য বড় মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে ‘ডিপফেক’ (Deepfake)। এই ক্ষতিকর প্রযুক্তি সম্পর্কে বারবার সবাইকে সাবধান করা হচ্ছে। তবে খারাপ বিষয় এটাই যে, এবার ডিপফেকের শিকার হয়েছেন জনপ্রিয় অভিনেত্রী তথা ভারতের এক সময়ের ‘ন্যাশনাল ক্রাশ’ রশ্মিকা মান্দানা। রশ্মিকা, দক্ষিণ ভারত ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি এবং বলিউডের পরিচিত মুখ, যাঁর নতুন সিনেমা ‘অ্যানিমাল’ আগামী ১লা ডিসেম্বর মুক্তি পাবে। আর এই ছবি মুক্তির আগেই ঘটেছে এক অস্বস্তিকর ঘটনা – ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে অভিনেত্রীর ডিপফেক (পড়ুন ভুয়ো অশ্লীল) ভিডিও। এই বিষয়ে বলিউড সুপারস্টার অমিতাভ বচ্চন গতকাল অর্থাৎ সোমবার মাইক্রোব্লগিং প্ল্যাটফর্ম X (Twitter-এর নতুন নাম)-এর মাধ্যমে অভিনেত্রী রশ্মিকা মান্দানার একটি ডিপফেক ভিডিও শেয়ার করে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তারপর থেকেই বলিউডে আলোড়ন তীব্র হয়েছে এবং চলচ্চিত্র তারকারা ছাড়াও অনেক সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারী বিষয়টি নিয়ে আশঙ্কা করছেন। এমনকি রশ্মিকা নিজে বলেছেন যে তিনি খুব ভয় পাচ্ছেন।

কীভাবে ভাইরাল হল রশ্মিকার ডিপফেক ভিডিও?

এক্স প্ল্যাটফর্মে অভিষেক নামের এক ইউজার, রশ্মিকা মান্দান্নার ডিপফেক ভিডিও শেয়ার করেছেন, তবে তারই সাথে তিনি নিশ্চিত করেছেন যে আসল ভিডিওটি ব্রিটিশ-ভারতীয় মেয়ে জারা প্যাটেলের, যিনি গত ৯ই অক্টোবর ইনস্টাগ্রাম (Instagram) অ্যাকাউন্টে ভিডিওটি শেয়ার করেছিলেন। এক্ষেত্রে ডিপফেক প্রযুক্তির মাধ্যমে রশ্মিকার মুখ এই ভিডিওতে সুপার ইম্পোজ করা হয়েছে, মানে এডিটের সাহায্যে জারার মুখে বসানো হয়েছে রশ্মিকার মুখ। এক্ষেত্রে প্রবীণ অভিনেতা অমিতাভ বচ্চন আসল ভিডিওটিও পুনরায় শেয়ার করেছেন।

গোটা ঘটনার জেরে দেশে ডিপফেক প্রযুক্তির বিরুদ্ধে কেন কোনো আইনি কাঠামো নেই এবং এর বিরুদ্ধে সরকারের তরফে কী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বা হবে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। এর জন্য রশ্মিকা একটি দীর্ঘ সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট লিখেছেন, যেখানে তিনি প্রযুক্তির অপব্যবহারে অবাক এবং ভীত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন। এদিকে রশ্মিকার ভিডিও আবার শেয়ার করে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রাজীব চন্দ্রশেখর বলেছেন যে, সরকার তার নাগরিকদের নিরাপত্তার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। যারা ভুয়ো তথ্য বা ভিডিও ছড়াচ্ছে বা তৈরি করছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি আরও স্পষ্ট করেছেন যে, আইটি নিয়ম, ২০২৩-এর অধীনে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলিকে ৩৬ ঘন্টার মধ্যে এধরণের জাল তথ্য মুছে ফেলতে হবে। এই কাজে ব্যর্থ হলে, তারা আইনি দায়বদ্ধতার মুখোমুখি হবে।

ডিপফেক ভিডিও প্রযুক্তি কী?

ডিপফেক প্রযুক্তি আসলে মেশিন লার্নিং বা ডিপ লার্নিং এর সাথে সম্পর্কযুক্ত, এটি যে কারো চেহারার ডেটা ব্যবহার করে কোনো ভিডিওর মুখ পরিবর্তন করতে পারে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (AI)-এর কারণে এটি ব্যবহার করা এবং এর অপব্যবহার আরও সহজ হয়ে গেছে। আদতে এটি ফ্রেম-বাই-ফ্রেম প্রযুক্তিতে এডিট করেনা, তাই কিছু ভিডিও একেবারে বাস্তব দেখায়। আর, প্রতারকরা এই ধরনের ভুয়ো ভিডিও ব্যবহার করে মানুষকে ব্ল্যাকমেইল ও হয়রানি করে।