অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোন ব্যবহারকারীরা সাবধান! ছদ্মবেশে ফোনে ঢুকছে বিপদজনক ম্যালওয়্যার

অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোন ব্যবহার করেন না সভ্য সমাজে এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া বেশ মুশকিল! কিন্তু প্রায়ই এই স্মার্টফোন সম্পর্কিত এমন সব খবর বা তথ্য আমাদের সামনে আসে, যা আমরা কোনোভাবেই উপেক্ষা করতে পারিনা। আর এই ধরণের খবরের মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য একটি হল ম্যালওয়্যার আশঙ্কা। আসলে উন্নত প্রযুক্তি এবং ইন্টারনেটের ওপর ভর করে এখন প্রায়ই এমন কিছু ম্যালিশিয়াস সফ্টওয়্যার বিকশিত হচ্ছে যার মূল লক্ষ্য নির্দিষ্ট ডিভাইস বা সিস্টেম কে কব্জা করা। সেক্ষেত্রে সিকিউরিটি রিসার্চাররা সম্প্রতি ম্যালওয়ারের একটি নতুন এবং আক্রমণাত্মক স্ট্রেন আবিষ্কার করেছেন, যা অত্যন্ত চতুরতার সাথে অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোনে সিস্টেম আপডেটার হিসেবে নিজেকে আত্মগোপন করে রাখে বলে দাবি করা হচ্ছে।

জিম্পেরিয়ামের (Zimperium) গবেষকদের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই নতুন ম্যালওয়্যারটি সিস্টেম আপডেট অ্যাপ্লিকেশনের ছদ্মবেশে ইউজারদের স্মার্টফোনে আশ্রয় নেয়। স্বাভাবিকভাবেই, ইউজারদের জন্য এই ক্ষতিকারক ম্যালওয়ারটিকে সনাক্ত করা সম্ভব হয়ে ওঠে না। কিন্তু কোনো ইউজার একবার যদি এটিকে সিস্টেম আপডেট মনে করে ইনস্টল করে নেয়, তবে তার অ্যান্ড্রয়েড ফোনের সাধারণ ডেটা সমেত ব্যক্তিগত তথ্যের চুরি হওয়া অবশ্যম্ভাবী!

তাছাড়া, গবেষকরা বলছেন যে, যদি হ্যাকাররা এই ম্যালওয়্যারের মাধ্যমে কোনো ফোনকে নিজের নিয়ন্ত্রণে আনতে পারে, তবে তারা সেই ফোনের মাধ্যমে অডিও এবং ফোন কল রেকর্ড করতে এমনকি ফটো তুলতেও সক্ষম হবে। এছাড়া তারা হোয়াটসঅ্যাপ ও মেসেঞ্জারের মত অ্যাপ্লিকেশনগুলি অ্যাক্সেস করার পাশাপাশি ফোনের এসএমএস, কন্ট্যাক্ট, কল লগের মত ডেটাবেস ফাইলগুলিও চুরি করতে পারবে। শুধু তাই নয়, ফোনে কী কী অ্যাপ্লিকেশন ইন্সটল আছে, ইউজার ডিফল্ট ব্রাউজারের বুকমার্কে এবং ইন্টারনেটে কী সার্চ করছেন সেই তথ্যও থাকবে হ্যাকারদের হাতের মুঠোয়। উপরন্তু, ফোনের ক্লিপবোর্ড ডেটা, নোটিফিকেশন কন্টেন্ট এবং ইউজারের লোকেশনও সহজেই নিরীক্ষণ করা যাবে।

এই বিষয়ে জিম্পেরিয়ামের সিইও শ্রীধর মিত্তাল, টেকক্রাঞ্চকে দেওয়া স্বাক্ষাৎকারে বলেছেন যে, এটি এখনো পর্যন্ত তাদের দেখা পরিশীলিত ম্যালওয়্যার যা তৈরি করতে যথেষ্ট সময় এবং প্রচেষ্টা ব্যয়িত হয়েছে বলে অনুমান করা হচ্ছে। সেক্ষেত্রে এই সিস্টেম আপডেটার জাতীয় আরও অনেক ভুয়ো অ্যাপে এটি পাওয়া যেতে পারে। তাদের সংস্থা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এই ধরণের অন্য অ্যাপগুলির সন্ধানের যথাসাধ্য চেষ্টা করছে বলেও জানিয়েছেন মিত্তাল।

এই প্রসঙ্গে বলে রাখি, এই নিরাপত্তাজনিত অস্বস্তির মধ্যেও একটি সুসংবাদ হল যে এই আক্রমণাত্মক খল অ্যাপটি এখনো গুগল প্লে স্টোরের ফাঁক গলে এই প্ল্যাটফর্মে আসেনি। তাই প্লে স্টোর থেকে অ্যাপ ডাউনলোড বা আপডেট করলে কোনো আশঙ্কা নেই। কিন্তু অন্য কোনো অ্যাপ স্টোর ব্যবহার করলে ইউজাররা সমস্যায় পড়তে পারেন।

হোয়াটসঅ্যাপে খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন