নির্বাচনে ব্যবহার হতে চলেছে আধুনিক প্রযুক্তি, ভোট দিতে গিয়ে সেলফি তুললেই এড়ানো যাবে লম্বা লাইন

Avatar

Published on:

ECI use Facial Recognition Karnataka Election

সাম্প্রতিক সময়ে ফেসিয়াল রেকগনিশন প্রযুক্তিটি বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। ফোনের স্ক্রিন আনলক সিস্টেম থেকে শুরু করে বিমানবন্দরে লাইনের ভিড় কমানোর জন্য প্রয়োজনীয় ভেরিফিকেশন‌ে ব্যবহার করা হচ্ছে এই প্রযুক্তি। এমতাবস্থায় এবার ECI (ইলেকশন কমিশন অফ ইন্ডিয়া) তথা ভারতীয় নির্বাচন কমিশনও আসন্ন কর্ণাটক নির্বাচন উপলক্ষে টেকনোলজিটির সুবিধা কাজে লাগানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে – এক্ষেত্রে বেঙ্গালুরুতে একটি ভোটকেন্দ্রে ফেসিয়াল রেকগনিশন ব্যবহার করা হবে। আর এই প্রযুক্তিটিকে নির্বাচনের সময় কাজে লাগানো হলে ভোটারদের লাইনের ভিড় দ্রুত কমবে এবং তাড়াতাড়ি ভোটদানের কাজ সম্পন্ন হয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে এর জন্য ভোটারদের একটি অফিসিয়াল অ্যাপে নিজের সেলফি আপলোড করে ফেসিয়াল রেকগনিশনের মাধ্যমে ভেরিফিকেশন করতে হবে। অতএব সোজা কথায় বললে, একটি সেলফি বা নিজস্বী তুললেই এবার ভোটকেন্দ্রের লম্বা লাইন এড়ানো সম্ভব হবে। আশা করা যায়, আগামীদিনে ভারতের অন্যান্য জায়গাতেও ভোটের জন্য এই প্রযুক্তিকে যথাযথভাবে কাজে লাগানো হবে।

কর্ণাটক নির্বাচনে ব্যবহার হবে ফেসিয়াল রেকগনিশন, এই পাঁচটি বিষয় জেনে নিন

১. কর্ণাটকের নির্বাচনে কোথায় ফেসিয়াল রেকগনিশন ব্যবহার করবে ECI?

মানিকন্ট্রোলের রিপোর্ট অনুযায়ী, নির্বাচন কমিশন, আগামী পরশু অর্থাৎ ১০ই মে-র নির্বাচনের জন্য শুধুমাত্র বেঙ্গালুরুর একটি ভোটকেন্দ্রে প্রযুক্তিটি ব্যবহার করবে। উল্লেখ্য, কর্ণাটকের মুখ্য নির্বাচনী অফিসারের অফিসের কাছে অবস্থিত প্যালেস রোডের গভর্নমেন্ট রামনারায়ণ চেল্লারাম কলেজের দুই নম্বর কক্ষের ভোটদাতারা এর সুবিধা পাবেন।

২. নির্বাচনে কীভাবে কাজ করবে ফেসিয়াল রেকগনিশন?

এমনিতে ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে গিয়ে তাদের নথিপত্র ম্যানুয়ালি যাচাই করতে হয়, যার কারণে বেশিরভাগ সময়ে দেরি হয়। সেক্ষেত্রে ভোটের সময় ফেসিয়াল রিকগনিশনের জন্য ভোটাররা অফিসিয়াল অ্যাপে সেলফি আপলোড করে ডকুমেন্ট ভেরিফিকেশন এড়িয়ে যেতে পারবেন। এই ব্যবস্থার ফলে ভোটগ্রহণ দ্রুত হবে এবং ভুয়ো ভোটিংও কমবে বলে আশা করা হচ্ছে।

৩. এই সুবিধা পেতে কোন অ্যাপ ব্যবহার করতে হবে?

গভর্নমেন্ট রামনারায়ণ চেল্লারাম কলেজের পাইলট বুথের ভোটারদের প্লে স্টোর বা অ্যাপ স্টোর থেকে অফিসিয়াল চুনাভানা (Chunavana) অ্যাপ্লিকেশন ডাউনলোড করতে হবে। এক্ষেত্রে প্রথমে এই অ্যাপে এপিক (EPIC) নম্বর এবং মোবাইল নম্বর দিয়েওটিপি (OTP) জেনারেট করতে হবে, একবার হয়ে গেলে, তারপর সেলফি ক্লিক করে তা অ্যাপে আপলোড করতে হবে। তবে যাইহোক, সাথে প্রয়োজনীয় নথিপত্র রাখতে কিন্তু ভুলবেননা।

৪. Chunavana অ্যাপ ভোটারদের আর কী সুবিধা দেবে?

ইসিআই কর্মকর্তাদের মতে, ভোটাররা চুনাভানা অ্যাপ ব্যবহার করে ভোটকেন্দ্রের কাছাকাছি অবস্থিত পার্কিংয়ের জায়গার অবস্থা পরীক্ষা করতে সক্ষম হবেন। অন্যদিকে প্রবীণ নাগরিক এবং শারীরিকভাবে অক্ষম ভোটাররা ভোট দিতে যাওয়ার সময় হুইলচেয়ার পরিষেবা পেতেও অ্যাপটি ব্যবহার করতে পারেন। এছাড়াও এই অ্যাপটিতে নির্বাচনী তফসিল, ভোটকেন্দ্র, প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী, নিকটবর্তী হাসপাতাল, থানা ইত্যাদির বিবরণ পাওয়া যাবে।

৫. নির্বাচন কমিশন হঠাৎ কেন এই প্রযুক্তি ব্যবহার করছে?

ইসিআই, সম্প্রতি বেঙ্গালুরুর ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ইনফরমেশন টেকনোলজি (IIT) এবং ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্সের শিক্ষার্থীদের জন্য ৩০ ঘন্টার অফলাইন হ্যাকাথন আয়োজন করে। ওই ইভেন্টের বিজয়ী দল ভোটদান প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করা, জাল ভোটিং এবং ভিড় কমানোর সমাধান হিসেবে নির্বাচন কমিশনকে ফেসিয়াল রেকগনিশন ব্যবহারের কথা বলে।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ভারত, দ্রুত এআই (AI) এবং ফেসিয়াল রেকগনিশনের মতো অত্যাধুনিক প্রযুক্তি গ্রহণ করছে। কিন্তু, এরই সাথে দেশে এই ধরনের প্রযুক্তির অপব্যবহারও বাড়ছে। তাই ভোট প্রক্রিয়ায় আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার শুধু কর্নাটক নির্বাচনে সীমাবদ্ধ থাকবে কিনা, তা বলবে সময়ই…

সঙ্গে থাকুন ➥