Online Education: অনলাইনে পঠনপাঠন ব্যবস্থায় অখুশি শিক্ষক সমাজ, সমীক্ষায় উঠে এল তথ্য

Avatar

Published on:

বিগত কয়েক বছরে মানুষ ভার্চুয়াল জগতেই বেশি সময় কাটাচ্ছে। কিন্তু, করোনা অতিমারীর আগের সময় আর এখনের সময়ের মধ্যে বিস্তর ফারাক! বিগত প্রায় দেড় বছরে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে আমাদের লাইফস্টাইলে, অভ্যেসে, হাঁটাচলায়, পড়াশোনা বা পঠনপাঠনের ধাঁচে এবং অন্যান্য নানা কর্মকাণ্ডেও। করোনার জেরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠাগুলি বন্ধ থাকলেও বিশ্বের প্রায় সর্বত্রই Zoom, Google Meet জাতীয় অ্যাপগুলির মাধ্যমে অনলাইন ক্লাসের সাহায্যে পঠনপাঠন চালু রাখা হয়েছে। এই বিশেষ ধরনের “ডিসট্যান্স এডুকেশন”, শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের দিকে একটি নতুন চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছে। এই পদ্ধতিতে পড়াশোনা সংক্রান্ত যাবতীয় কাজকর্ম চালিয়ে যেতে বাধ্য হলেও সম্প্রতি এক সার্ভের মাধ্যমে জানা গেছে যে, বিপুল সংখ্যক শিক্ষক অনলাইন টিচিং সিস্টেম পছন্দ করেন না। এর কারণ এবং অনলাইন টিচিং সিস্টেম সম্পর্কে শিক্ষকদের অভিমত কী, সে বিষয়েও নানা চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ্যে এসেছে।

সার্ভে অনুযায়ী, প্রায় ৪৩ শতাংশ শিক্ষক বলেছেন যে, মহামারী চলাকালীন তাঁরা অনলাইন টিচিং পদ্ধতিতে সন্তুষ্ট নন। শুধু তাই নয়, পিটিআই-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, তাঁদের মধ্যে ৯ শতাংশের কাছাকাছি শিক্ষক অনলাইন টিচিং সিস্টেম সম্পর্কে পুরোপুরিভাবে অসন্তুষ্ট। দিল্লি কমিশন ফর প্রোটেকশন অফ চাইল্ড রাইটস (DCPCR)-এর প্রথম জার্নাল – Children First: Journal on Children’s Lives-এ প্রকাশিত একটি অনলাইন সার্ভেতে এই তথ্য প্রকাশিত হয়েছে। এতে মোট ২২০ জন স্কুল শিক্ষক অংশ নিয়েছিলেন।

কেন শিক্ষকরা অনলাইন শিক্ষায় সন্তুষ্ট নন?

১. অনুপস্থিতি (১৪ শতাংশ)।

২. বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের দিকে যথাযথভাবে নজর দেওয়া হচ্ছে না (২১ শতাংশ)।

৩. শিক্ষার্থীরা কম মাত্রায় মনোযোগ দিচ্ছে (২৮ শতাংশ)।

৪. শিক্ষার্থীদের দ্বারা প্রকাশিত আবেগপ্রবণ সমস্যা (১৯ শতাংশ)।

৫. শিক্ষার্থীদের যথাযথ মূল্যায়ন হচ্ছে না এবং তাদের কোনো অ্যাসাইনমেন্টও কমপ্লিট করতে হচ্ছে না (১০ শতাংশ)।

সার্ভেতে আরও জানা গেছে যে, প্যানডেমিক পরিস্থিতিতে শিক্ষার এই আমূল পরিবর্তন শিক্ষক তথা শিক্ষার্থী উভয়ের কাছেই একটি বড়ো চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। পাশাপাশি অনলাইন নির্ভর শিক্ষার জন্য যথাযথ ইকুইপমেন্টের অভাবে বহু সংখ্যক ছাত্রছাত্রী সঠিকভাবে শিক্ষালাভের সুযোগ পাচ্ছে না। তাই সকলের কাছে শিক্ষাদানের এই পদ্ধতিকে অ্যাক্সেসযোগ্য করে তুলতে এখনও বেশ কিছু জরুরি পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন, তবেই সকল ছাত্রছাত্রী নির্বিশেষে এই পদ্ধতিতে শিক্ষাদান সফল হবে।

কীভাবে অনলাইন শিক্ষাদানের পদ্ধতিকে সফল করা যেতে পারে?

১. ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের অ্যাক্সেসিবিলিটি।

২. ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের সাশ্রয়ী মূল্য।

৩. প্রয়োজনভিত্তিক পাঠ্যক্রম এবং পেডিগজি।

৪. লার্নিং কমিউনিটির পর্যাপ্ত ক্ষমতা বৃদ্ধি।

সার্ভেতে আরও জানা গেছে যে, শিক্ষকদের মতে, ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে মুখোমুখি কোনো ইন্টার‌্যাকশন না হওয়া শিক্ষাদানের ক্ষেত্রে এক চরম বাধার সৃষ্টি করছে। সেইসাথে তাঁরা একথাও উল্লেখ করেছেন যে, বাড়িতে থেকে নিজেদের অন্যান্য কাজকর্মের পাশাপাশি যথাযথ সময়সূচী বজায় রেখে অনলাইন ক্লাস নেওয়াও এক গুরুতর দায়িত্বভার পালন করার সমান। এছাড়া, অনলাইনে পড়াশোনার ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি অভিভাবকদেরও যে তাদের পড়াশোনার প্রতি সমানভাবে নজর রাখতে হবে, সেকথাও তাঁরা বিশেষভাবে উল্লেখ করেছেন। শুধু শিক্ষকরা নয়, শিক্ষার্থীরাও যে অনলাইনে শিক্ষাদানের পদ্ধতিতে খুব একটা খুশি নয় সেকথাও সার্ভেতে উঠে এসেছে। তাদের মতে, বন্ধুদের সাথে দেখা হওয়া বা শিক্ষকদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করার পাশাপাশি বিদ্যালয়ের অন্যান্য অনেক অনুষ্ঠান তারা মিস করছে। ফলে এই নতুন পদ্ধতিতে শিক্ষালাভ যে তাদের কাছে খুব একটা মনঃপূত হচ্ছে না, সেকথা নিঃসন্দেহে বলাই বাহুল্য।

হোয়াটসঅ্যাপে খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন

সঙ্গে থাকুন ➥