নতুন বছরের শুরুতেই মেসেজিং মাধ্যম হোয়াটসঅ্যাপ (WhatsApp) কী পরিমাণ বিতর্কে জড়িয়ে পড়ে – তা আশা করি আপনাদের মনে করিয়ে দিতে হবে না। জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে ফেসবুকের (Facebook) মালিকানাধীন সংস্থাটির প্রাইভেসি পলিসিতে বদল আনার খবর সামনে আসা মাত্রই সারা বিশ্বে হইচই পড়ে যায়। ভারতে বিতর্কের জল গড়ায় সুপ্রিম কোর্ট অবধি। সেক্ষেত্রে আজ এই মামলার শুনানিতে দেশের সর্বোচ্চ আদালতে তীব্র ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হয়েছে হোয়াটসঅ্যাপ এবং ফেসবুক কে; পাশাপাশি সোশ্যাল মিডিয়া জায়ান্টটিকে তাদের প্রাইভেসি পলিসি সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা দিতে বলা হয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট, এই দুই সংস্থাকে একটি কড়া নোটিশ পাঠিয়েছে বলেও জানা গিয়েছে।
রিপোর্ট অনুযায়ী এদিন সুপ্রিম কোর্ট, ফেসবুক এবং হোয়াটসঅ্যাপকে বলেছে যে “আপনারা ২-৩ ট্রিলিয়ন ডলারের সংস্থা হতে পারেন তবে মানুষ টাকার চেয়েও তাদের গোপনীয়তাকে বেশি মূল্য দেয়।” তাই যেহেতু দেশের হোয়াটসঅ্যাপ বা ফেসবুক ইউজাররা নিজেদের ব্যক্তিগত তথ্য এবং গোপনীয়তার সুরক্ষা নিয়ে চিন্তিত, সেক্ষেত্রে আদালত হস্তক্ষেপ করতে বাধ্য বলেও দাবি করা হয়েছে।
এই দুই জনপ্রিয় সংস্থার মামলার সূত্রপাত আজকের নয়। ২০১৬ সালে কারমান্য সিং স্যারিন নামে এক ব্যক্তি হোয়াটসঅ্যাপ তথা ফেসবুকের বিরুদ্ধে আদালতে একটি আবেদন করেন। এরপর আগুনে ঘি ঢালে হোয়াটসঅ্যাপের পরিবর্তিত নীতিমালা সংক্রান্ত সাম্প্রতিক বিতর্ক। দিন কয়েক আগেই অ্যাপ্লিকেশনটির আপডেটেড গোপনীয়তা নীতিটিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে দেশের শীর্ষস্থানীয় বিচারালয়ে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন বিবেক নারায়ণ শর্মা নামে এক আইনজীবী। এরপরেই নড়েচড়ে বসে আদালত।
যদিও প্রতিবারের মতই এবারেও সমস্ত অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছে WhatsApp এবং Facebook। দুই সংস্থাই, আদালতকে জানিয়েছে যে একই গোপনীয়তা নীতি ইউরোপীয় দেশগুলি বাদে বিশ্বের সমস্ত ইউজারদের জন্য প্রযোজ্য। হোয়াটসঅ্যাপের তরফে উপস্থিত সিনিয়র অ্যাডভোকেট কপিল সিবাল-ও বলেন যে এগুলি কোনো সংবেদনশীল তথ্য শেয়ার করেনা।
সেক্ষেত্রে উক্ত নোটিশে সর্বোচ্চ আদালত জানিয়েছে যে, নাগরিকদের গোপনীয়তা নষ্ট হওয়ার বিষয়ে সমস্ত ধরণের সন্দেহগুলি খতিয়ে দেখা হবে এবং একমাস অর্থাৎ ৪ সপ্তাহ পর এই মামলার পরবর্তী শুনানি গ্রহণ করা হবে। আপাতত, আদালতের নির্দিষ্ট বেঞ্চ এবিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত না নেওয়া পর্যন্ত হোয়াটসঅ্যাপকে তার নতুন নীতি এগিয়ে না নিয়ে যাওয়ার আদেশ দেওয়া হয়েছে। যদিও চাপের মুখে পড়ে আগেই মে মাস পর্যন্ত প্রাইভেসি পলিসি সাময়িকভাবে স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে হোয়াটসঅ্যাপ।