চিরতরে বন্ধ হচ্ছে 2G ও 3G পরিষেবা? সওয়াল Jio ও Vodafone Idea-র

Jio এবং Vodafone Idea উভয় সংস্থা ভারতে ২জি এবং ৩জি পরিষেবা বন্ধ করতে আগ্রহী হলেও, Airtel এখনও এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেনি।

ভারতের প্রথমসারির নেটওয়ার্ক প্রদানকারী সংস্থা রিলায়েন্স জিও (Reliance Jio) বর্তমানে সারা ভারতে 5G পরিষেবা বন্টনের কাজে ব্যস্ত। সম্ভবত চলতি বছরের প্রথমার্ধেই এই কাজে ইতি টানবে সংস্থাটি। হালফিলে ‘টেলিকম রেগুলেটরি অথরিটি অফ ইন্ডিয়া’ (TRAI)-র পক্ষ থেকে ‘5G ইকোসিস্টেমের মাধ্যমে ডিজিটাল রূপান্তর’ (Digital Transformation through 5G Ecosystem) শিরোনামের সাথে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। এই প্রতিবেদনের প্রতিক্রিয়াস্বরূপ মুকেশ আম্বানির সংস্থাটি, ভারতকে প্রকৃতপক্ষে ‘ডিজিটাইজেশন’ -এর পথে চালিত করার জন্য 2G এবং 3G পরিষেবা চিরতরে বন্ধ করার পরামর্শ দিয়েছে৷ ভোডাফোন আইডিয়া (Vi)-ও গ্রাহকদের 4G এবং 5G নেটওয়ার্কে আপগ্রেড করার এই পদক্ষেপ সমর্থন করছে।

জানিয়ে রাখি, ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে TRAI, 5G নেটওয়ার্কের সুবিধাগুলি তুলে ধরে ‘5G ইকোসিস্টেমের মাধ্যমে ডিজিটাল রূপান্তর’ বিষয়ক একটি রিপোর্ট প্রকাশ করে। এই রিপোর্টের প্রতিক্রিয়ায় Jio, দেশে 2G এবং 3G নেটওয়ার্ক পরিষেবা বন্ধ করার পরামর্শ দেয়। মূলত টেলিকম অপারেটরদের ঘাড়ে চেপে থাকা অপ্রয়োজনীয় নেটওয়ার্ক খরচ কমাতে এবং দেশবাসীকে লেটেস্ট 4G / 5G নেটওয়ার্কে স্থানান্তরিত করানোর উদ্দেশ্যেই এই পরামর্শ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে জিও কর্মকর্তারা৷

মজার বিষয় হল, Reliance Jio এদেশে 2G পরিষেবা অফার করে না। সংস্থাটি ২০১৬ সাল থেকে 4G নেটওয়ার্ক এবং এখন 5G পরিষেবা দিচ্ছে। তবে যেহেতু Jio বর্তমানে টেলিকম ইন্ডাস্ট্রির শীর্ষস্থানে অবস্থান করছে, সেহেতু সংস্থাটির এই পরামর্শ TRAI গুরুত্ব সহকারে দেখতে পারে।

প্রসঙ্গত, ২জি এবং ৩জি পরিষেবা বন্ধ করা হলে বেশ কিছু অসুবিধার সম্মুখীন হতে হবে দেশবাসীকে। বিশেষত গ্রামীণ এলাকার লক্ষ লক্ষ বাসিন্দা যারা এখনো ফিচার ফোন ব্যবহার করেন তারা যথেষ্ট সমস্যায় পড়বেন। যদিও এই প্রভাব স্বল্পসময়ের জন্য স্থায়ী থাকবে বলেই মনে হচ্ছে। তবে জিও প্রস্তাবিত এই পদক্ষেপ দীর্ঘমেয়াদী ইতিবাচক প্রভাবও ফেলতে পারে দেশের অগ্রগতিতে। যেমন ২জি / ৩জি পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হলে নাগরিকরা অন্ততপক্ষে ৪জি নেটওয়ার্কে আপগ্রেড হবেন। যার দরুন, ৩জি -এর তুলনায় আরো ভালো ইন্টারনেট স্পিড, ভয়েস কোয়ালিটি ইত্যাদি অ্যাক্সেস করা যাবে। একই সাথে এই পদক্ষেপ ভারতের বিভিন্ন প্রত্যন্ত অঞ্চলে দুর্দান্ত ইন্টারনেট সংযোগের সাহায্যে ডিজিটাইজেশন বাড়াতে সাহায্য করবে।

টেলিকম অপারেটররা কীভাবে ২জি / ৩জি পরিষেবা বন্ধ হলে লাভবান হবে?

দেশবাসী যদি ২জি / ৩জি থেকে ৪জি নেটওয়ার্কে আপগ্রেড হন তাহলে টেলিকম সংস্থাগুলির ‘অ্যাভারেজ রেভেনিউ পার ইউজার’ (ARPU) বৃদ্ধি পাবে। পাশাপাশি ডেটা ব্যবহারের হার উর্দ্ধমুখী হবে এবং উচ্চ ডেটা লিমিট যুক্ত রিচার্জ প্ল্যানের চাহিদা বাড়বে। এই প্রত্যেকটি বিষয় সংস্থাগুলির সামগ্রিক আয়কে প্রভাবিত করবে।

এদিকে জানিয়ে রাখি, জিও এবং ভোডাফোন আইডিয়া উভয় সংস্থা ভারতে ২জি এবং ৩জি পরিষেবা বন্ধ করতে আগ্রহী হলেও, এয়ারটেল এখনও এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেনি। এবার দেখার বিষয়ে TRAI জিও প্রস্তাবিত পরামর্শে কীভাবে সাড়া দেয়।