Ola ইলেকট্রিক স্কুটারের ফিচার টিজ হল,  ড্রাইভিং রেঞ্জ ও বুট স্পেসের নিরিখে ধারেকাছে কেউ নেই!

মার্কেটিংয়ের যাবতীয় গুরুদায়িত্ব নিজের কাঁধেই তুলে নিয়েছেন ওলা (OLA)-র কর্ণধার ভাবিশ আগরওয়াল (Bhavish Agarwal)। কারণ, কোম্পানির মার্কেটিং টিমের কোনও কাজই তার পছন্দ হচ্ছে না। ওলার আপকামিং ইলেকট্রিক স্কুটারের কতগুলি বিজ্ঞাপনের আইডিয়া টুইটে ভাগ করে নিয়েছেন ভাবিশ। প্রত্যেকটিতে প্রচারের জন্য ব্যবহৃত শব্দগুলি কেটে সংশোধন করেছেন তিনি। নিজের টুইটার প্রোফাইল এভাবেই লঞ্চের আগেই অভিনব উপায়ে ওলা ইলেকট্রিক স্কুটার (OLA Electric Scooter)-এর ফিচার টিজ করলেন ভাবিশ।

Bhavish Agarwal টুইটারে Ola ইলেকট্রিক স্কুটারের ফিচার টিজ করলেন

ভাবিশ টুইটে লিখেছেন, মার্কেটিং টিমের তরফ থেকে এই পাগলাটে বিজ্ঞাপনগুলি পেলাম। জানিনা ওরা কী চিন্তাভাবনা করছে, অকমর্ণ্য সব। এদের উপর থেকে আমি হাল ছেড়ে দিয়েছি। কিছু বিজ্ঞাপনের ধারণা দিয়ে আপনারা কি আমাকে সাহায্য করতে পারবেন, ওলা ইলেকট্রিক স্কুটার তো শীঘ্রই লঞ্চ হতে চলেছে।

উল্লেখ্য, মার্কেটিং টিমের উপর বীতশ্রদ্ধ হওয়ার প্রশ্নই আসছে না। আসলে এ সবই মার্কেটিং স্ট্রাটেজির অংশ।

ভাবিশ তিনটি বিজ্ঞাপনী পোস্টার টুইট করেছেন। ক্যাপিটাল ও বোল্ড অক্ষরে লেখা Size does matter, On easy, Ride way longer কথাগুলি কেটে নতুন শব্দ বসিয়ে তিনটি ফিচার টিজ করেছেন ভাবিশ। সেগুলি কী কী, দেখে নেওয়া যাক।

Ola ইলেকট্রিক স্কুটারে Biggest in class boot space থাকবে

সম্প্রতি ওলা ইলেকট্রিক স্কুটার চালিয়ে বেঙ্গালুরুতে কোম্পানির সদরদপ্তর থেকে একটি ক্যাফেতে যাওয়ার ভিডিও পোস্ট করেছিলেন ভাবিশ আগরওয়াল। ভিডিওতে দেখা যায়, ক্যাফেতে পৌঁছনার পর ওলার ইলেকট্রিক স্কুটার দেখতে ভিড় জমালেন কয়েকজন। তারপর বুট স্টোরেজ খুলে তাঁদেরকে ভাবিশ দেখান, ভেতরের কতটা স্পেস রয়েছে। দু’টো হাফ হেমলেট হামেশাই সেখানে ধরে যাবে। এই সেগমেন্টে এতটা আন্ডার সিট স্টোরেজ অন্য কোনও স্কুটারে থাকবে না, তার আভাস তখনই পাওয়া গেছিল। লেটেস্ট টুইটেও সেই ফিচারের ব্যাপারে জানানো হল। এই সেগমেন্টে সবচেয়ে বড় বুট স্পেস থাকবে ওলার ইলেকট্রিক স্কুটারে।

Ola ইলেকট্রিক স্কুটার App ভিত্তিক Keyless access সহ আসবে

ওলা ইলেকট্রিক স্কুটারের জন্য ডেডিকেটেড অ্যাপ্লিকেশন থাকবে। ঠিক Yamaha Motorcycle Connect X, TVS Connect, ও Hero Xconnect-এর মতো।

Ola ইলেকট্রিক স্কুটার Category Leading Riding রেঞ্জ দেবে

ফুল চার্জে ওলা ই-স্কুটার একটানা ১৫০ পথ চলতে পারবে বলে মনে করা হচ্ছে। পোস্টারে লেখা এই ক্যাটেগরির সেরা লং রেঞ্জ কিন্তু সেই দিকেই ইঙ্গিত করছে।

Ola ইলেকট্রিক স্কুটারের অন্যান্য ফিচার

এছাড়া ওলা ইলেকট্রিক স্কুটার রিমুভেবল লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারি, ডিজিটাল ইনস্ট্রুমেন্ট ক্লাস্টার, ক্লাউড কানেক্টিভিটি সহ নানা অত্যাধুনিক ফিচারের সাথে আসবে।

Ola HyperCharger

চার্জিং পরিকাঠামোর অভাব যাতে ওলার ইলেকট্রিক স্কুটারের জনপ্রিয়তার পথে অন্তরায় না হয়ে দাঁড়ায়, তার আগাম প্রস্তুতিও ওলা সেরে রাখছে। বৈদ্যুতিন যানবাহনের চার্জ দেওয়ার পরিকাঠামোর উন্নয়নে ওলা দেশজুড়ে হাইপারচার্জার নেটওয়ার্ক (Hypercharge Network) তৈরি করবে। এই বছরে একশোটি শহরে পাঁচ হাজার চার্জিং পয়েন্ট বসানোর মাধ্যমে সেই কর্মযজ্ঞ শুরু হবে। আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে ভারতে চারশোটি শহরে এক লাখের বেশি এরকম চার্জিং পয়েন্ট স্থাপন করা হবে।

ওলার চার্জিং স্টেশন বা হাইপারচার্জার নেটওয়ার্ক দু’ধরণের ফরম্যাটে আসবে; একটি হবে ভার্টিকাল টাওয়ার ভিত্তিক চার্জার‌, এবং অপরটি বিভিন্ন মল, আইটি পার্ক, অফিস কমপ্লেক্স, ক্যাফে-রেস্তোরাঁর মতো জনপ্রিয় এবং লোক সমাগমের জায়গায় স্টান্ড এলোন চার্জার হিসেবে বসানো হবে।

ওলা ই-স্কুটার আরোহীকে হাইপারচার্জার নেটওয়ার্ক পয়েন্টে এসে চার্জিং পয়েন্টের প্লাগটি স্কুটারের সাথে সংযুক্ত করতে হবে। ব্যাটারি কতটা চার্জ হল বা ফুল চার্জ হতে কতটা বাকি, একটি ডেডিকেটেড মোবাইল অ্যাপ্লিকেশনে তা নিরীক্ষণ করা যাবে। চার্জিং স্টেশনে ওলা স্কুটারের ব্যাটারিকে ১৮ মিনিটের মধ্যেই ৫০ শতাংশ চার্জ করা যাবে। স্মার্টফোনের মাধ্যমেই পেমেন্ট করার সুবিধা থাকবে।

Ola Futurefactory

বেঙ্গালুরু শহর থেকে ১৫০ কিমি দূরত্বে তামিলনাড়ুর কৃষ্ণাগিরিতে ৫০০ একর জমির উপরে গড়ে উঠছে ফিউচারফ্যাক্টরি (Futurefactory)। আর কয়েকমাসের মধ্যেই পৃথিবীর বৃহত্তম ইলেকট্রিক স্কুটার কারখানা হিসেবে এটি মাথা তুলে দাঁড়াবে। কারখানার প্রথম দফার (Phase 1) কাজ এখন প্রায় শেষের দিকে।

তামিলনাড়ুর কারখানার কাজ সম্পূর্ণ করতে ওলা ২৪১৬ কোটি টাকার কাছাকাছি বিনিয়োগ করেছে। সেখানে বছরে প্রায় ১ কোটি ই-স্কুটার তৈরি হবে। শুধু ভারতের বাজারে নয়, ইউরোপ, যুক্তরাজ্য, লাতিন আমেরিকার, এশিয়া প্যাসিফিক, অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ডেও পৌঁছে যাবে ওলার মেড ইন ইন্ডিয়া ইলেকট্রিক স্কুটার! প্রাথমিকভাবে এই কারখানাতে ২ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হবে। পুরোদমে কাজ চালু হয়ে যাওয়ার পর ওলার ফিউচারফ্যাক্টরি প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষাভাবে আরও ৮ হাজার মানুষের রুজি রোজগারের স্থান হয়ে উঠবে।

হোয়াটসঅ্যাপে খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন