WhatsApp-এ নতুন প্রতারণার ফাঁদ, বসের মেসেজ পেয়ে গলে গেলেই ঠকবেন

Avatar

Published on:

WhatsApp Paytm new scam alert scammers

আপনি যেসংস্থার অধীনে কর্মরত তার সিইও বা বস যদি আপনাকে স্বয়ং মেসেজ পাঠান তাহলে কি তা উপেক্ষা করেতে পারবেন? না পারাটাই স্বাভাবিক। কিন্তু বসকে রিপ্লাই দিতে গিয়ে যদি আপনার পুরো মাইনেটাই হাপিস হয়ে যায় ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে তবে কেমন লাগবে? আপনারা হয়তো ভাবছেন আমরা হঠাৎ এসব কি বলছি। এমনটা বলার কারণ, স্ক্যামাররা আপনাদের টাকা চুরি করার জন্য একটি অভিনব তথা নতুন উপায় খুঁজে বের করেছে। প্রতারকরা এখন বিভিন্ন সংস্থার কর্মচারীদের তাদেরই বসের ছদ্মবেশ ধারণ করে প্রতারণা করছে। সম্প্রতি দেশীয় ই-কমার্স সাইট Meesho -এর একজন কর্মচারী দাবি করেছেন যে, তিনি হালফিলে উক্ত সংস্থার সিইও -এর কাছ থেকে হোয়াটসঅ্যাপে একটি মেসেজ পান, যা স্বাভাবিকভাবেই তার মনোযোগ আকর্ষণ করে। যদিও পরবর্তীতে বসের থেকে গিফট কেনার জন্য টাকা পাঠানোর অনুরোধ পেয়ে কর্মচারীটি বুঝতে পারেন যে তিনি স্ক্যামারের পাল্লায় পড়েছেন।

মেসো সংস্থা কর্মী শিখর সাক্সেনা (Shikhar Saxena) সম্প্রতি টুইটারে একটি পোস্টে শেয়ার করে তার সাথে ঘটা একটি স্ক্যামিংয়ের ঘটনা জনসমক্ষে আনেন। ওই পোস্ট অনুসারে, শিখর তার বস বিদিত আত্রেয়ের (Vidit Aatrey) -এর কাছ থেকে হোয়াটসঅ্যাপে একটি মেসেজ পান। হোয়াটসঅ্যাপ প্রোফাইলটিতে মেসোর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বা সিইও -এর ছবিও দেওয়া ছিল। ফলে শিখর প্রথমটায় সত্যি তার কোম্পানির বস ব্যক্তিগতভাবে তাকে মেসেজ করে বলেই ধরে নিয়েছিলেন। মেসেজ শুরু হয়েছিল প্রথাগত অভিবাদন “হ্যালো” দিয়ে। কিন্তু কথোপকথন কিছুটা এগোনোর পরই বিপরীত পক্ষ থেকে মেসেজ আসে যে – “আমি বর্তমানে একজন ক্লায়েন্টের সাথে একটি কনফারেন্স কলে আছি এবং আমার এই ক্লায়েন্টকে কিছু উপহার দিতে হবে। আপনি কি Paytm -এর মাধ্যমে টাকা প্রদান করে জিনিসটি কিনতে পারবেন? আমি আপনাকে টাকা ফেরত দিয়ে দেব।”

সৌভাগ্যবশত, এরূপ মেসেজ দেখে শিখরের বুঝতে বাকি থাকে না যে এটা স্ক্যামারের পাতা ফাঁদ এবং তাকে প্রতারণা করার চেষ্টা করা হচ্ছে। কেননা মেসোর মতো ই-কমার্স সাইট পরিচালনার দায়িত্বে থাকা ব্যক্তি কখনোই তার কর্মচারীর থেকে টাকা চাইবে না উপহার কেনার জন্য।

শিখরের এই টুইট দেখে আরো বেশ কয়েকটি কোম্পানিতে কর্মরত ব্যক্তিরা একই ধরনের স্ক্যামিং মেসেজ পাওয়ার দাবি করেছেন। যেমন অঙ্কিত নামের এক টুইটার ব্যবহারকারী একটি স্ক্রিনশট শেয়ার করে তার সাথে ঘটা অনুরূপ জালিয়াতির কথা জানিয়েছেন। যদিও অঙ্কিতকে তার বস নয়, বরং একটি নামি কোম্পানির এইচআর (HR) রূপী স্ক্যামার হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ করেছিল। যেখানে তাকে পার্ট টাইম চাকরি করে দৈনিক ৮০০-১০০০ টাকা রোজগারের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। আজকাল আগ বাড়িয়ে কাউকে চাকরি দেওয়া বা সহজে টাকা রোজগার – দুটোর কোনোটাই যে সম্ভব নয় তা আমরা সকলেই জানি। আর তাই স্ক্যামারের এই নতুন জালিয়াতি ফন্দি ধরে ফেলেছিলেন অঙ্কিত।

এই ঘটনার পর মনে হচ্ছে, প্রতারকরা সরাসরি লিঙ্ক যুক্ত মেসেজ পাঠিয়ে স্ক্যাম করার পরিবর্তে হোয়াটসঅ্যাপে ভিক্টিমদের সাথে আলাপ-পরিচয় বাড়ানোর মাধ্যমে বিশ্বাস অর্জন করে জালিয়াতি করার পথ অবলম্বন করতে বেশি পছন্দ করছে। কেননা প্রত্যেকটি মেসেজেই কিছুটা কথাবার্তা বলার পর টাকা পাঠানোর অনুরোধ করা হচ্ছে।

যাইহোক, হোয়াটসঅ্যাপ এবং পেটিএম (Paytm) যে বরাবরই স্ক্যামারদের প্রিয় জায়গা তা আমাদের বুঝতে বাকি থাকার কথা নয়। এর আগেও এই দুটি প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে মানুষকে ফাঁসানোর ঘটনা সামনে এসেছে। যেমন গত সপ্তাহে এক মহিলাকে ওয়ার্ক-ফ্রম-হোম চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে ৮ লাখ টাকারও বেশি চুরি করে নেয় স্ক্যামাররা। পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে যে, গুরুগ্রামের বসবাসকারী সরিতা এস -এর কাছে একটি হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজ আসে। যেখানে – বাড়িতে বসেই অর্থ উপার্জনের সুযোগ আছে এবং ইউটিউব চ্যানেলের সাবস্ক্রিপশন করে ৫০ টাকা পর্যন্ত উপার্জন করতে পারবেন বলে লেখা ছিল। সারিতা এই প্রলোভনে পা দিয়ে, দুটি চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করে এবং তারপর লায়লা নামের একজন রিসেপশনিস্ট তার সাথে যোগাযোগ করে। লালিয়া সরিতা -কে জানায় যে, সে যদি প্রত্যেকটি টাস্ক সম্পন্ন করতে পারে তবে তাকে আরো টাকা দেওয়া হবে। যদিও শেষমেশ সারিতা টাস্কগুলি করার পর কোনো প্রকার টাকা তো পাননি, উল্টে ৮.২০ লাখ টাকা খুইয়েছিলেন প্রতারকদের ফাঁদে পড়ে।

সঙ্গে থাকুন ➥