৫৩ কোটি ইউজারের ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁস! ‘পুরানো’ বলে দায় ঝাড়লো Facebook

গত শনিবার ইজরায়েলের সাইবার ক্রাইম ইন্টালিজেন্স ফার্ম হাডসন রক (Hudson Rock)-এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও সিটিও (চিফ টেকনোলজি অফিসার) অ্যালন গালের জবানিতে, সোশ্যাল মিডিয়া জায়ান্ট Facebook-এর একটি বড় ডেটা কেলেঙ্কারির কথা আমাদের সামনে এসেছে। এক্ষেত্রে, আমাদের এই সুপরিচিত সময় কাটানোর মাধ্যমটিতে ডেটা প্রাইভেসি ব্রিচের দরুন, ১০৬টি দেশের প্রায় ৫৩৩ মিলিয়ন ইউজারের ব্যক্তিগত তথ্য একটি নিম্নস্তরের হ্যাকিং ফোরামে ফাঁস হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এমনকি এই কেলেঙ্কারির শিকার হওয়া শতাধিক দেশের মধ্যে আমাদের দেশের ৬ মিলিয়নেরও বেশি Facebook ইউজারের ডেটা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে বলে দাবি করেছেন অ্যালন। কিন্তু খবরটি প্রকাশের পর প্রথমে এই বিষয়ে দায়সারা উত্তর দিলেও, কিছু সময় পর এই সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটটির এক মুখপাত্র স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন যে, এটি একটি পুরোনো ডেটার তালিকা যা ২০১৯ সালের আগস্ট মাসে সামনে এসেছিল। তাছাড়া ওই সময় এই সংশ্লিষ্ট সমস্যাটির সংশোধনও করে দেওয়া হয়েছিল বলে অভিমত ওই মুখপাত্রের।

অ্যালনের মতে, ফেসবুকের নিরাপত্তাজনিত ব্যবস্থায় কোনো ফাঁক থেকে যাওয়ায়, ভারত সহ আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, ব্রাজিল, চীন, আফগানিস্তান, বাংলাদেশের মতো বেশ কিছু বড় দেশ থেকে ৫০০ মিলিয়নেরও বেশি সংখ্যক ইউজারদের তথ্য ফাঁস হয়ে গেছে। এক্ষেত্রে ইউজারদের ফেসবুকের অ্যাকাউন্টের সাথে সংযুক্ত অন্যান্য ব্যক্তিগত তথ্যের সাথে তাদের ফোন নম্বরগুলিও হ্যাকার ফোরামে বিনামূল্যে উপলব্ধ হয়েছে এবং এগুলি ক্রমশ হ্যাকারদের মধ্যে ছড়িয়ে যাচ্ছে বলে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।

তবে অ্যালন মনে করছেন যে, গত বছরেই এই দুর্ঘটনাটির সূত্রপাত হয়েছে যা এখন বেশ অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে; তাছাড়া গত জানুয়ারি থেকে এই ডেটাবেসটি প্রকাশ্যে এসেছে বলেও তাঁর ধারণা। এই প্রসঙ্গে, কয়েক মাস আগে ইনস্ট্যান্ট মেসেজিং প্ল্যাটফর্ম Telegram-এ ফেসবুক ইউজারদের বহু তথ্য, বট আকারে বিক্রি হওয়ার ঘটনাটিকেও ফের মনে করিয়ে দিয়েছেন তিনি।

এদিকে Facebook কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে যে, তারা এই ডেটা ফাঁস সংক্রান্ত ঘটনাটিকে আটকে দিতে পেরেছে। ফলে আর কোনো ইউজারের তথ্য নতুন করে চুরি হওয়ার সম্ভাবনা নেই। কিন্তু সংস্থা কর্তৃক নিরাপত্তাজনিত ফাঁক-ফোকর সংশোধন করার পরেও পাবলিক ডোমেনে আগে ফাঁস হওয়া ইউজারদের ব্যক্তিগত সমস্ত তথ্য এখনো পর্যন্ত রয়ে গেছে। ফলত, এই ডেটা তালিকা সহজে অ্যাক্সেস করে বা সমস্ত তথ্য ব্যবহার করে হ্যাকাররা সহজেই সোশ্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং আক্রমণ বা ইউজারদের প্রতারণা করার চেষ্টা করতে পারে – এই আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। অর্থাৎ ফেসবুকের এই সংশোধনটি যে খুব একটা সুবিধে করতে পেরেছে তা জোর দিয়ে বলা যাচ্ছে না। সেক্ষেত্রে যারা এই ডেটা কেলেঙ্কারিকে এড়ানোর জন্য নিজের ফেসবুকের পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করে দিলেই এই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে বলে ভাবছেন, তারাও কোনো মতে জালিয়াতির মতো ঘটনায় জড়িয়ে পড়া থেকে রেহাই পাবেন না!

হোয়াটসঅ্যাপে খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন