আমজনতার সাধ্যের মধ্যে ইলেকট্রিক গাড়ি বাজারে নিয়ে আসুন, নির্মাতাদের উদ্দেশ্যে বার্তা মুখ্যমন্ত্রীর

কেন্দ্রীয় সরকার জ্বালানির আমদানি খরচে লাগাম পরাতে ও পরিবেশ দূষণকে বাগে আনতে বদ্ধপরিকর। তাছাড়া অদূর ভবিষ্যতে জীবাশ্ম জ্বালানির সীমাবদ্ধতার কথা মাথায় রেখে ইতিমধ্যেই পেট্রোল ও ডিজেলে ২০ শতাংশ ইথানল মেশানোর পক্ষে সবুজ সংকেত দিয়েছে মোদি সরকার। জীবাশ্ম জ্বালানির উপর নির্ভরতা কমানোর একমাত্র উপায় হল বৈদ্যুতিক যানবাহনের সংখ্যা বাড়ানো। তবে এক্ষেত্রে প্রধান অন্তরায় হল চড়া দাম।

গতকাল কর্ণাটকে EV Campaign 2022-এর উদ্বোধনে এসে সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বাসবরাজ বোম্মাই সমস্ত নির্মাতা সংস্থাগুলির উদ্দেশ্যে বলেন, তারা যেন সাধারণ মানুষের সাধ্যের মধ্যে বৈদ্যুতিক গাড়ি বাজারে নিয়ে আসার কথা ভাবেন। সে দিন তিনি ১৫২টি বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ দেওয়ার স্টেশনেরও উদ্বোধন করেন।

তিনি আরও বলেন যে, ” ব্যাটারি ও মোটর হল বৈদ্যুতিক যানবাহনের প্রধান অংশ। এটা আমাদের কাছে খুব গর্বের বিষয় যে এই সমস্ত অংশগুলি “আত্মনির্ভর মিশনের” আওতায় আমাদের দেশের মধ্যেই তৈরি করা হচ্ছে।। ইলেকট্রিক ভেহিকেলের দাম সাধারণ মানুষের সাধ্যের মধ্যেই হওয়া উচিত। প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলিকে এই ব্যাপারে দৃষ্টি দেওয়া প্রয়োজন।”

তিনি যোগ করেন, রাজ্য সরকার তাদের নতুন ইভি পলিসির মাধ্যমে বেঙ্গালুরু ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেড (BESCOM) নামে এক নোডাল এজেন্সির মাধ্যমে জনসমাগম হয় বা জনগণের যাতায়াত আছে এমন জায়গায় আরও বেশি সংখ্যক চার্জিং স্টেশন স্থাপন করেছে। তাঁর মতে “ব্যাটারি সোয়াপিং” আরোও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বৈদ্যুতিক গাড়ি শিল্পে এবং এই বিষয়টি আগামী দিনে আরও গুরুত্বসহকারে দেখা হবে।

তাছাড়াও চিরাচরিত শক্তির সীমাবদ্ধতার জন্য অচিরাচরিত শক্তিগুলিকেই আরো বেশি করে উন্নত করার জন্য জোরদার সওয়াল করেন বোম্মাই। জীবাশ্ম জ্বালানির অপ্রতুলতা ও তার দ্বারা পরিবেশ দূষণের দিকটিও তিনি সকলকে মনে করিয়ে দেন। তিনি বলেন, বৈদ্যুতিক যানবাহন এক্ষেত্রে খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। বর্তমানে প্রচুর সংখ্যক বৈদ্যুতিক দুই চাকার গাড়ি রাস্তায় দেখা গেলেও খুব শীঘ্রই প্রচুর পরিমাণে বৈদ্যুতিক গাড়ি, বাস এমনকি বহু চাকা যুক্ত বড় ট্রাকও বাজারে দেখা যাবে। খুব শীঘ্রই জীবাশ্ম জ্বালানির পরিবর্তন খুঁজতে হলে আমাদের আরও প্রচুর গবেষণা করা প্রয়োজন।

সবশেষে তিনি জানান, রাজ্য সরকার বেঙ্গালুরু মেট্রোপলিটন ট্রান্সপোর্ট কর্পোরেশনের (BMTC) অন্তর্গত পরিবহনে ইলেকট্রিক বাস রাস্তায় নামানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তাঁর কথার মধ্যে দিয়ে উঠে আসে যে কর্নাটক এই মুহূর্তে দেশের সবচেয়ে বড় সৌরশক্তি উৎপাদনকারী রাজ্য। কিন্তু সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো সৌরশক্তি সংরক্ষণ, তবে এই ব্যাপারে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে যৌথভাবে তারা প্রকল্প শুরু করেছে।

তাঁর কথায়, যে হাইড্রোজেন মিশ্রিত জ্বালানির ব্যাপারে তার রাজ্য দুটি কোম্পানির সঙ্গে ইতিমধ্যেই চুক্তিপত্র স্বাক্ষরিত করেছে। আগামী দিনে অপ্রচলিত শক্তি হিসাবে হাইড্রোজেন মিশ্রিত জ্বালানির অবদান কতখানি সেই সম্পর্কেও তিনি আলোকপাত করেন।