অ্যালার্ট! বেশিরভাগ ভারতীয় ATM PIN সহ অন্যান্য তথ্য সেভ রাখছে ফোন বা কম্পিউটারে, আপনিও এই ভুল করছেন না তো

আজকালকার সময়ে একজন ব্যক্তির একাধিক ব্যাংক অ্যাকাউন্ট এবং একই সাথে একাধিক ডেবিট, ও ক্রেডিট কার্ডও থাকতে পারে। মনে রাখার সুবিধার্থে আমরা এই সব কার্ডগুলির জন্য একই পিন ব্যবহার করি। তবে সাইবার সেল ডিপার্টমেন্টের তরফ থেকে, একাধিক ব্যাংক কার্ডের জন্য একটি পাসওয়ার্ড বা এটিএম পিন না রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়। যদিও আলাদা আলাদা ভাবে প্রত্যেকটি পিন নম্বর মনে রাখা সহজ না হওয়ায় অনেকেই মোবাইলের নোটবুক ফোল্ডার, কম্পিউটার বা ই-মেইলে সেগুলি সেভ রাখে। যদিও এই কাজে আপনার বড়সড় আর্থিক ক্ষতি হতে পারে। কেন বলছি এমন কথা? তাহলে প্রতিবেদনটি পুরোটা পড়ুন।

ই-মেইল বা মোবাইলে পিন নম্বর সেভ রাখলে বিপদে পড়তে পারেন আপনি

প্রতি তিনজনের মধ্যে গড়ে একজন ভারতীয় মোবাইল, কম্পিউটার বা ই-মেইলে তাদের ব্যক্তিগত ডেটা স্টোর করে রাখে – এই মন্তব্য আমাদের নয়, কমিউনিটি প্ল্যাটফর্ম লোকালসার্কলস দ্বারা পরিচালিত একটি নতুন সার্ভেতে এমনটা দাবি করা হয়েছে। রিপোর্টে আরো বলা হয়েছে যে, ডিভাইসে বা ই-মেইলে সেভ করে রাখা তথ্যাদির মধ্যে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ডিটেলস, ডেবিট কার্ডের ডেটা, ক্রেডিট কার্ড ক্রেডেনশিয়াল, প্যান কার্ড নম্বর, আধার নম্বর অন্তর্ভুক্ত। শুধু তাই নয়, ১১% ভারতীয় তাদের ব্যক্তিগত ফিনান্সিয়াল তথ্য ফোনের কন্টাক্ট লিস্টে স্টোর করে রাখে। এক্ষেত্রে, আপনাদের জেনে রাখা উচিত যে, ফোনে থাকা অ্যাপ, কন্টাক্ট লিস্টের পাশাপাশি অন্যান্য অ্যাপগুলিকেও অ্যাক্সেস করার অনুমতি চেয়ে থাকে। আর একবার যদি আপনি অনুমতি দিয়ে দেন, তাহলে এই সব তথ্য বেহাত হয়ে যেতে পারে।

সার্ভে থেকে আরো উঠে এসেছে যে, ৭% মানুষ তাদের ফোনে নিজেদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ডের সিভিভি, এটিএম পাসওয়ার্ড, আধার নম্বর, পিন নম্বর প্রভৃতি সেভ করে রাখেন। আবার ১৫% মানুষ ই-মেইল অ্যাকাউন্ট বা কম্পিউটারে এই সমস্ত তথ্য স্টোর করে রাখেন। মাত্র ২১% মানুষ, মুখস্ত বা মনে করে রাখেন তাদের ব্যক্তিগত ডকুমেন্টের বিবরণ। আর, ৩৯% মানুষ জানিয়েছেন, তারা ডাইরিতে এই তথ্যাদি লিখে রাখতে পছন্দ করেন।

ক্রমবর্ধমান হ্যাকিং এবং ডেটা চুরির ঘটনা প্রতিনিয়ত সামনে আসার পর একটা কথাই বলা যায়, অনলাইনে বা মোবাইল, পিসির মতো ডিভাইসে যেকোনো প্রকারের পাসওয়ার্ড, ডকুমেন্টের (আধার কার্ড, প্যান কার্ড) বিবরণ স্টোর করে রাখা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। বিশেষত, এটিএম পিন কোডের মতো ডেটা স্টোর করার থেকে বিরত থাকা উচিত।

কোথায় ক্রেডেনশিয়াল (পরিচয়পত্র) ডেটা সেভ করা উচিত?

আমাদের এই প্রতিবেদন পড়ার পর স্বাভাবিকভাবেই উক্ত প্রশ্নটি আপনাদের মনে জাগতেই পারে। আপনারা যদি নিজেদের ব্যক্তিগত ডেটা নিরাপদ রাখতে চান, তাহলে নিম্নলিখিত ধাপগুলি অনুসরণ করুন :

১. পাসওয়ার্ড ডকুমেন্টকে সুরক্ষিত রাখে। তাই আপনারা ফোনের কন্টাক্ট লিস্ট বা নোটবুক ফোল্ডারের পরিবর্তে, পাসওয়ার্ড প্রোটেক্টেড পিডিএফ ফাইল তৈরী করে তাতে আপনার ডকুমেন্টের বিবরণ লিখে রাখতে পারেন। আর সময়ে সময়ে পাসওয়ার্ড আপডেট করতে পারেন। তবে অতিঅবশ্যই এই পাসওয়ার্ড অপর কাউকেও জানাবেন না ।

২. ক্লাউড স্টোরেজেও আপনারা ডেটা স্টোর করতে পারেন। ডেটা স্টোর করে রাখার জন্য এটি একটি নিরাপদ স্থান। তাই পিসি বা ই-মেইলের থেকে ক্লাউড স্টোরেজে আপনারা নিজেদের ডেটা স্থানান্তরিত করতে পারেন। নিরাপত্তা বাড়াতে আপনারা এই ডেটা ফাইলকে পাসওয়ার্ড দিয়ে সুরক্ষিত করতে পারবেন।

৩. আপনারা যদি ক্লাউড ব্যবহারের পক্ষপাতী না হন, তবে একটি পোর্টেবল ডিস্কেও ডেটা সেভ করে রাখতে পারেন। অর্থাৎ, হার্ডডিস্ক বা পেন ড্রাইভ ব্যবহার করতে পারেন। প্রতিটি পোর্টেবল ডিস্কে পাসওয়ার্ড সেট করার বিকল্প থাকে, তাই ডেটার নিরাপত্তা নিয়ে আপনাদের চিন্তা করতে হবে না।

৪. সংবেদনশীল ফিনান্সিয়াল ডিটেলস বেহাতে চলে গেলে, গুরুতর আর্থিক ক্ষতির সম্ভাবনা দেখা যায়। তাই সর্বদা সচেতন ও আপডেট থাকা উচিত। যাতে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে আচমকা টাকা তুলে নেওয়ার মতো কোনো সন্দেহজনক ঘটনা হলেই, তা সঙ্গে সঙ্গে আপনার নজরে পরে। এছাড়া, নিরাপত্তার খাতিরে কিছু সময় পর পর অ্যাকাউন্ট পাসওয়ার্ড ও এটিএম পিন নম্বর পরিবর্তন করা উচিত।

হোয়াটসঅ্যাপে খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন