মাত্র ৫,৪৯৯ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে এই দুর্ধর্ষ ফিচারের 5G ফোন? ভুলেও কেনার কথা ভাববেন না

5G নেটওয়ার্ক উপলব্ধ না হলেও দেশে 5G ভিত্তিক স্মার্টফোনের চাহিদা উত্তরোত্তর বেড়েই চলেছে। প্রায় প্রতিদিনই লঞ্চ হচ্ছে নতুন 5G হ্যান্ডসেট, যাদের দাম ১৫ হাজার টাকার বেশি। তবে এই সমস্ত স্মার্টফোনগুলির বিক্রি বন্ধ করতে বাজারে এসেছে Nefon Q20 Ultra। আসলে বিগত কয়েকদিন ধরে ইন্টারনেট জুড়ে এই ফোনটির বিজ্ঞাপন দেখা যাচ্ছে, যেখানে ফোনটির দাম মাত্র ৫,৪৯৯ টাকা বলে দাবি করা হচ্ছে। সবচেয়ে আশ্চর্যের ব্যাপার এই Nefon Q20 Ultra ফোনটি শুধু 5G ফোন নয়, এতে নাকি ফ্ল্যাগশিপ গ্রেডেরও সমস্ত ফিচার বর্তমান।

সেক্ষেত্রে পাঠকদের বলি, এই ফোন সংক্রান্ত বিজ্ঞাপনের ফাঁদে ভুলেও পা দেবেন না বা এই ফোন কেনার কোনোরকম চেষ্টা করবেন না! কারণ সামান্য অসাবধান হলেই আপনি হতে পারেন জালিয়াতির শিকার। ইতিমধ্যে কাউন্টারপয়েন্ট রিসার্চের ডিরেক্টর তরুণ পাঠক টুইটারে Nefon Q20 Ultra 5G ফোনের বিজ্ঞাপন বা দুর্দান্ত ফিচারের কথা উল্লেখ করে পোস্ট করেছেন এবং জনসাধারণকে এই ডিভাইসটি না কেনার জন্য সতর্ক করেছেন। কিন্তু কেন এই বিধি-নিষেধ? আসুন জেনে নিই।

আসলে ৬,০০০ টাকারও কম দামের এই ফোনটিতে ৮ জিবি র‌্যাম, কোয়ালকম স্ন্যাপড্রাগন ৮৬৫ এসওসি চিপসেট, ৬৪ মেগাপিক্সেলের কোয়াড রিয়ার ক্যামেরা, ৩২ মেগাপিক্সেলের ডুয়াল ফ্রন্ট ক্যামেরা এবং ৬,০০০ এমএএইচ ব্যাটারির মত ফিচার রয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে। ফলত এত সব ফিচারের গ্রহণযোগ্যতা যে বেশি বা ফোনটির ফিচার অত্যন্ত আকর্ষণীয় – এমনটা স্বীকার না করে উপায় নেই। কিন্তু, মনে দানা বাঁধা প্রলোভনকে সরিয়ে একটু খেয়াল করলেই দেখবেন যে ভারতের মত বড় স্মার্টফোন বাজারে Nefon নামক কোনো ব্র্যান্ডের নাম এর আগে শোনা যায়নি। তাছাড়া বিজ্ঞাপনে প্রদর্শিত ফোনটি, কোনো জনপ্রিয় ই-কমার্স পোর্টালেই বিক্রির জন্য উপলব্ধ নেই।

পরিবর্তে এটি কিছু অনামী (বলা ভালো অচেনা) ওয়েবসাইটে তালিকাবদ্ধ রয়েছে, যেখানে বলা হচ্ছে Nefon Q20 Ultra 5G-এর দাম ১৩,৯৯৯ টাকা হলেও এটি বিশেষ অফারে ৫,৪৯৯ টাকায় কেনা যাবে। শুধু তাই নয়, পেটিএম, ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, ই-ওয়ালেট বা নেট ব্যাঙ্কিংয়ের মাধ্যমে প্রিপেইড পেমেন্ট করলে মিলবে অতিরিক্ত ১,০০০ টাকার ছাড়!

এদিকে তরুণ পাঠকের টুইট ছাড়াও, নিফন (Nefon)-এর ডেডিকেটেড ওয়েবসাইটে উক্ত ফোনটি কিনতে উৎসুক উমেশ শর্মা নামের এক ব্যক্তির অভিযোগ সামনে এসেছে, যেখানে বলা হয়েছে এই ফোনটির প্রিপেইড অর্ডার করেও তিনি সেটি হাতে পাননি; এমনকি অর্ডার দেওয়ার পর মেলেনি ট্র্যাকিং বা অন্য কোনো অর্ডার ডিটেইলস। তাই এই ফোন কিনতে গিয়ে যে আগ্রহীরা প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার টাকা খোওয়াতে পারেন – এমন সম্ভাবনা প্রবল। উপরন্তু এই জাতীয় অফার, ডিল বা বিজ্ঞাপনগুলি সাধারণত সাইবার জালিয়াতির অংশ যাতে সহজেই কোনো ইউজারের শংসাপত্র এবং সংবেদনশীল তথ্য চুরি হতে পারে বলেও মনে করা হচ্ছে। সুতরাং সস্তায় কেনার চক্করে প্রতারণার ফাঁদে পড়বেন না এবং বিচার বিবেচনা করেই কোনো থার্ড পার্টি অনলাইন প্ল্যাটফর্ম থেকে শপিং করবেন।

হোয়াটসঅ্যাপে খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন