১৯ লক্ষেরও বেশি অ্যাকাউন্ট নিষিদ্ধ করল WhatsApp, নিরাপদে থাকতে হলে এখনই সাবধান হোন

বিগত প্রায় এক বছর ধরে একাধিকবার জোরালো পদক্ষেপ নেওয়া সত্ত্বেও অসৎ কার্যকলাপ করা থেকে কিছু ইউজারদেরকে কোনোমতেই আটকানো যাচ্ছে না, আর এর ফলস্বরূপ Meta (মেটা) মালিকানাধীন বিশ্বের সর্বাধিক জনপ্রিয় ইন্সট্যান্ট মেসেজিং প্ল্যাটফর্ম WhatsApp (হোয়াটসঅ্যাপ)-ও ক্রমেই কঠোর থেকে কঠোরতর হচ্ছে। সেক্ষেত্রে মে মাসে আবারও ইন্টারনেটের অপব্যবহার এবং ক্ষতিকারক বা অবাঞ্ছিত তথা স্প্যাম মেসেজ প্রেরণের জন্য, অর্থাৎ সোজা কথায় প্ল্যাটফর্মে অনৈতিক আচরণের জন্য সংস্থাটি ভারতে ১.৯ মিলিয়নেরও (১৯ লক্ষ) বেশি অ্যাকাউন্ট নিষিদ্ধ করেছে। ২০২২ সালের ১ মে থেকে ৩১ মের মধ্যে WhatsApp-এর দায়ের করা মাসিক গ্রিভেন্স কমপ্লায়েন্স রিপোর্টে (আইটি রুলস ২০২১ অনুযায়ী) এই তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রসঙ্গত জানিয়ে রাখি, গত বছর নতুন তথ্যপ্রযুক্তি আইন চালু হওয়ার পর থেকেই হোয়াটসঅ্যাপ, ফেসবুক, এবং টুইটারের মতো নামজাদা সংস্থাগুলির সঙ্গে ক্রমাগত মতবিরোধ হয়েছে সরকারের। তবে কেন্দ্রের তরফে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল যে, ভারতীয় আইন মেনে জাতীয় সুরক্ষাকে সর্বপ্রথম অগ্রাধিকার দিয়ে তবেই এদেশে ব্যবসা করতে পারবে কোম্পানিগুলি, নচেৎ নতুন আইন অনুযায়ী উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবে ভারত সরকার। আইটি রুলস ২০২১ অনুযায়ী, ৫০ লক্ষের বেশি ইউজার রয়েছে এমন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলিকে প্রতি মাসেই সরকারের কাছে কমপ্লায়েন্স রিপোর্ট পেশ করতে হবে। সেইসাথে যে-কোনো প্ল্যাটফর্মের কাছে কত সংখ্যক অভিযোগ জমা পড়ছে এবং তার বিরুদ্ধে সংস্থাগুলি কী ধরনের ব্যবস্থা নিচ্ছে, তার যাবতীয় খুঁটিনাটিও জানাতে হবে সরকারকে। এর পর থেকেই নানা টালবাহানার পর অবশেষে এই ধরনের মাসিক রিপোর্ট প্রকাশ করা শুরু করেছে হোয়াটসঅ্যাপ এবং ভবিষ্যতেও করবে।

অ্যাকাউন্ট ব্যানের প্রসঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপ জানিয়েছে যে, ইউজারদের যাবতীয় ক্ষতিকারক তথা অনৈতিক আচরণ রোধ করতে তারা নিজস্ব টুল এবং রিসোর্স ব্যবহার করে, এবং তার মাধ্যমে সনাক্ত করা অ্যাকাউন্টগুলিকেই তারা বন্ধ করে। কোনো অ্যাকাউন্টে রেজিস্ট্রেশনের সময়, কিংবা মেসেজিং চলাকালীন, অথবা নেগেটিভ ফিডব্যাকের রেসপন্স দেওয়ার সময় এই টুলগুলি যাবতীয় ক্ষতিকর কার্যকলাপ চিহ্নিত করতে সিদ্ধহস্ত। সুতরাং, এই বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্মটিতে কোনোরকমের দুরাচরণ বা দুর্ব্যবহার যে সংস্থার তরফ থেকে একেবারেই বরদাস্ত করা হবে না, সেকথা জলের মতো স্পষ্ট।

আগেই বলেছি যে, প্ল্যাটফর্মটিতে যাবতীয় অবৈধ ক্রিয়াকলাপ রুখতে বিগত প্রায় এক বছর ধরে WhatsApp বেশ জোরকদমে এই অ্যাকাউন্ট ব্যানের প্রক্রিয়া চালিয়ে যাচ্ছে। সংস্থার মতে, সকল ব্যবহারকারীদের স্প্যাম-ফ্রি এবং অত্যন্ত সাবলীল ও নিরাপদ ইউজার এক্সপেরিয়েন্স প্রদান করাই তাদের মূল উদ্দেশ্য; আর এর জন্য সংস্থাটি যে-কোনো রকমের কঠোর পদক্ষেপ নিতে বিন্দুমাত্রও পিছপা হবে না। তাই ভবিষ্যতেও কয়েক লক্ষ অসৎ কার্যকলাপকারী ইউজারের WhatsApp অ্যাকাউন্ট যে নিশ্চিতভাবে নিষিদ্ধ হতে চলেছে, সেকথা নিঃসন্দেহে বলাই বাহুল্য।