Apple কে বোকা বানিয়ে 140 কোটি টাকা চুরি, ভারতীয় কর্মীর কেলেঙ্কারি সিনেমাকেও হার মানাবে

Avatar

Published on:

Ex Apple Employee admits Fraud Tech Giant of 17 million

Apple এর সাথে প্রতারণায় নাম জড়ালো এক ভারতীয়র। ধীরেন্দ্র প্রসাদ নামের ওই প্রাক্তন অ্যাপল কর্মী সংস্থার প্রোডাক্ট সাপ্লাই-টিমে থেকে চুপিসারে দীর্ঘ ৭ বছর ধরে প্রায় ১৪০ কোটি টাকা চুরি করেছে। তবে এই কেলেঙ্কারিতে তিনি একা নন, বরং আরো অনেক সহযোগী জড়িত ছিল। এই প্রতারণামূলক ঘটনা সামনে আসার পর তদন্ত শুরু হয় এবং ব্যক্তিটির বিরুদ্ধে আনা যাবতীয় অভিযোগ এখন প্রমাণিত হয়েছে। রিপোর্ট অনুসারে, জালিয়াতির ঘটনায় জড়িত থাকার দরুন ধীরেন্দ্র প্রসাদকে তার জীবনের পরবর্তী ২০ বছর হয়তো জেলই কাটাতে হবে।

চুরির দায়ে ২০ বছরের সাজা ভুগতে হবে Apple -এর প্রাক্তন কর্মীকে

প্রাক্তন অ্যাপল কর্মী ধীরেন্দ্র প্রসাদ, সংস্থার সাথে ১৭ মিলিয়ন ডলারেরও (ভারতীয় মূল্যে প্রায় ১৪০ কোটি টাকা) বেশি প্রতারণার জন্য সম্প্রতি দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। প্রসাদ অ্যাপলের ‘গ্লোবাল সার্ভিস সাপ্লাই চেইন’ বিভাগে ২০০৮ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০১৮ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত কর্মরত ছিলেন। তার কাজ ছিল, বিভিন্ন থার্ড পার্টি বিক্রেতাদের কাছ থেকে অ্যাপলের জন্য যন্ত্রাংশ এবং সার্ভিস ক্রয় করা। ক্যালিফোর্নিয়ার নর্দার্ন ডিস্ট্রিক্টের মার্কিন অ্যাটর্নি অফিসের তরফ থেকে দেওয়া বিবৃতি অনুসারে, প্রসাদ মূলত সংস্থার সাথে যুক্ত হওয়ার ৩ বছরের মাথায় অর্থাৎ ২০১১ সালে এই জালিয়াতির কারবার শুরু করেছিলেন এবং ২০১৮ সাল পর্যন্ত চলমান রেখেছিলেন। অপরাধ স্বীকার করার সময় ধীরেন্দ্র প্রসাদ জানিয়েছিলেন যে, তিনি দীর্ঘ ৭ বছর ধরে অবৈধভাবে অর্থ নিয়েছেন। জানা গিয়েছে, তিনি ইনভয়েস বা চালানে যন্ত্রাংশের মূল্য বাড়ানো এবং অ্যাপলকে সেই সকল সার্ভিসের জন্য টাকা চার্জ করেছেন।

মার্কিন অ্যাটর্নি অফিস জানিয়েছে, এই কেলেঙ্কারিতে ধীরেন্দ্র প্রসাদের সাথে জড়িত অপর দুই সহযোগী বা বলা ভালো সহ-ষড়যন্ত্রকারী হল রবার্ট গ্যারি হ্যানসেন এবং ডন এম বেকার। দুজনকেই প্রসাদের পরিকল্পনায় অংশ নেওয়ার অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছিল এবং তারা জড়িত থাকার কথা স্বয়ং স্বীকারও করেছেন।

এক্ষেত্রে উল্লেখিত প্রতারক ত্রয়ীর কর্মকান্ডের একটি উদাহরণ দিই আপনাদের। প্রসাদ স্টেটমেন্ট দিয়েছেন যে, ২০১৩ সাল থেকে তিনি অ্যাপলের ইনভেন্টরি থেকে মাদারবোর্ড নিয়ে তার সহযোগী ডন এম বেকারের কোম্পানি ‘CTrends’ -এ পাঠাতেন। বেকার এইসকল প্রাপ্ত মাদারবোর্ডের কম্পোটেন্টগুলি সংগ্রহ করতেন এবং তারপর অ্যাপলেরই যন্ত্রাংশকে অ্যাপলকে পুনরায় ফেরত পাঠাতেন। আর, কম্পোনেন্ট শিপমেন্টের জন্য প্রসাদ CTrends কোম্পানির ইনভয়েস ব্যবহার করে টেক জায়ান্টটির কাছ থেকে টাকাও নিতেন। সোজা কথায়, মাছের তেলে মাছ ভাজা ছিল এই দুই ব্যক্তির মুখ্য কাজ। যাইহোক, অ্যাপল এইসকল জালি ইনভয়েসগুলি পরিশোধ করার পর প্রসাদ এবং বেকার লেভার টাকা ভাগাভাগি করে নিতেন।

অ্যাপলের টাকা চুরির পাশাপাশি ধীরেন্দ্র প্রসাদ ট্যাক্স জালিয়াতির সাথে জড়িত থাকার কথাও স্বীকার করেছেন। তিনি রবার্ট গ্যারি হ্যানসেনকে তার পাওনাদারদের অবৈধ অর্থ প্রদানের নির্দেশ দিতেন। আর এই অবৈধ লেনদেন গোপন করার জন্য তিনি একটি শেল বা ভুয়ো কোম্পানি তৈরী করার মাধ্যমে CTrends-এ জাল ইনভয়েস ইস্যু করার ব্যবস্থা করেছিলেন। যা দেখিয়ে ডন এম বেকার ট্যাক্স ডিপার্টমেন্টের কাছে “লক্ষ লক্ষ ডলারের অযৌক্তিক ট্যাক্স ফেরত পাওয়ার দাবি উত্থাপন করতো।” আর এই কারণেই ‘ইন্টারনাল রেভেনিউ সার্ভিস’ বা IRS মোট ১.৮ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়‌ বলে জানিয়েছেন মার্কিন অ্যাটর্নি অফিসের কর্মকর্তা।

রিপোর্ট অনুসারে, ধীরেন্দ্র প্রসাদ সহ তার বাকি দুই সহযোগীর শাস্তির শুনানির তারিখ ১৪ মার্চ ২০২৩ নির্ধারিত হয়েছে। প্রসাদ ‘মেইল ফ্রড’ এবং ‘ওয়ার ফ্রড’ -এর জন্য ইতিমধ্যেই দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন, তাই বিচারে তাকে সর্বোচ্চ ২০ বছরের কারাদণ্ডের সম্মুখীন হতে হবে। একইসাথে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে প্রতারণা করার জন্য অতিরিক্তভাবে আরো ৫ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে। এছাড়াও, প্রসাদ তার প্ল্যান করা প্রতারণামূলক স্কিমগুলির আয়ে অর্জিত ৫ মিলিয়ন ডলারের সম্পদ ছেড়ে দেওয়ায় সম্মত হয়েছেন বলেও দাবি করেছে মার্কিন অ্যাটর্নি অফিস।

সঙ্গে থাকুন ➥