Apophis: 5 বছরের মধ্যে পৃথিবীর কাছাকাছি আসছে দৈত্যাকার গ্রহাণু! ইঙ্গিত দিল NASA

Avatar

Published on:

Apophis Asteroid & Earth Collision

মহাকাশ সম্পর্কিত বিভিন্ন প্রাকৃতিক ঘটনা সবসময়ই মানুষের কৌতূহল, জ্ঞান বিকাশ এবং সৌন্দর্য-তৃষ্ণা পূরণের কারণ হয়ে থাকে। কিন্তু এক এক সময় এই মহাশূন্যই পৃথিবীর জন্য বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। যেমন হালফিলে জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন যে, আজ থেকে প্রায় ৫ বছর পর, এম্পায়ার স্টেট বিল্ডিংয়ের মতো বড় (পড়ুন লম্বা) একটি গ্রহাণু পৃথিবীর ২০,০০০ মাইল কাছ ঘেঁষে পেরোবে। সেক্ষেত্রে কোনোভাবে যদি এই গ্রহাণু বা অ্যাস্টেরয়েড (Asteroid)-এর সাথে পৃথিবীর সংঘর্ষ হয়, তাহলে সমূহ ক্ষয়-ক্ষতি হতে পারে বলে আশঙ্কা করাটাই স্বাভাবিক। তবে মার্কিনি মহাকাশ গবেষণা সংস্থা NASA, এই বিষয়ে কিছু বিশদ তথ্য শেয়ার করেছে এবং তাদের ২০১৬ সালে লঞ্চ হওয়া মহাকাশযান ওই সম্ভাব্য ‘ঘনিষ্ঠতার’ সময়ে বিশদ পরীক্ষা করে তথ্য দেওয়ার মতো অবস্থানে থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে। এমনকি ইতিমধ্যে গ্রহাণু গঠন, অন্যান্য তথ্য জোগাড় এবং সম্ভাব্য সংঘর্ষের বিরুদ্ধে একটি প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য অ্যারিজোনা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা একটি মিশনের ওপর কাজও শুরু করেছেন।

দুই দশক আগে আবিষ্কার হয়েছিল ওই গ্রহাণু

অবগতির জন্য জানিয়ে রাখি যে, আলোচ্য গ্রহাণুটির নাম অ্যাপোফিস (Apophis), যা ২০০৪ সালে মানে প্রায় ২০ বছর আগে আবিষ্কার হয়েছিল। ওই সময় নাসা এটিকে পৃথিবীর জন্য অন্যতম বিপজ্জনক বলে চিহ্নিত করেছিল এবং ২০২৯ সালে এটি পৃথিবীর সাথে সংঘর্ষ হওয়ার মতো কাছে আসবে – এমন আভাস দিয়েছিল। পরবর্তী সময়ে অ্যাপোফিস গ্রহাণু এবং পৃথিবীর মধ্যে সংঘর্ষ ঘটতে পারে, এমন সম্ভাবনার জন্য ২০৩৬ সাল এবং ২০৬৮ সালের কথা উল্লেখ করা হয়। যদিও সেসব আশঙ্কাও এক সময় উড়িয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু মনে হচ্ছে, এখন আবার এই বিষয়ে কিছু ঝুঁকি দেখা যাচ্ছে।

Apophis Asteroid: জেনে নিন বিশাল গ্রহাণুর খুঁটিনাটি

প্রাচীন মিশরীয় পৌরাণিক কাহিনীতে বর্ণিত এক মারাত্মক দানবের নামে বিশালাকার গ্রহাণুটির নামকরণ করা হয় অ্যাপোফিস। অন্যান্য গ্রহাণুর মতো, অ্যাপোফিস হল প্রাথমিক সৌরজগতের একটি ধ্বংসাবশেষ, আর এর খনিজ, রসায়ন ৪.৫ বিলিয়ন বছরেরও বেশি সময় ধরে অপরিবর্তিত রয়েছে। এর পরিমাপ প্রায় ১,১১০ ফুট (৩৪০ মিটার) এবং এটি আয়তাকার (কিছুটা চিনাবাদামের আকৃতির) একটি পাথুরে গ্রহাণু যা বেশিরভাগ লোহা, নিকেলসহ সিলিকেট উপাদান নিয়ে গঠিত বলে অনুমান করছেন মহাকাশ বিজ্ঞানীরা। নাসার ঘোষণা অনুযায়ী, এই গ্রহাণুটি ২০২৯ সালের ১৩ই এপ্রিল পৃথিবীর পৃষ্ঠের প্রায় ১৯,৮০০ মাইল ঘেঁষে পেরোতে পারে। এটি, বিশ্বের কিছু জায়গা থেকে কয়েক ঘন্টার জন্য খালি চোখে দৃশ্যমান হবে বলে জানিয়েছেন অ্যারিজোনা বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালিত মিশনের ডেপুটি প্রিন্সিপাল ইনভেস্টিগেটর মাইকেল নোলান।

কতটা ক্ষতি হতে পারে পৃথিবীর?

প্রতি ৭,৫০০ বছরে একবার না একবার কোনো গ্রহাণু, পৃথিবীর খুব কাছাকাছি চলে আসে। সেক্ষেত্রে পৃথিবীর জীবনের জন্য যথেষ্ট বড় আশঙ্কার কারণ না হলেও, হাইপারসনিক স্পিডে অ্যাপোফিস-আকারের গ্রহাণু ধাক্কা মারলে একটি বড় শহর বা অঞ্চল ধ্বংস হতে পারে বলে নোলান জানিয়েছেন। তবে পাশাপাশি এটাও জানা যাচ্ছে যে, পৃথিবীর মহাকর্ষের জোয়ারের টান সম্ভবত গ্রহাণুর পৃষ্ঠ এবং গতিতে পরিমাপযোগ্য ব্যাঘাত ঘটাবে, যাতে এর কক্ষপথের পথ এবং ঘূর্ণনের পরিবর্তন হবে। এমনকি পৃথিবীর জোয়ারের শক্তি, অ্যাপোফিসে ভূমিধ্বস ঘটাতে পারে এবং ধূমকেতুর মতো লেজ তৈরি করতে পারে এমন শিলা এবং ধূলিকণা অপসারণ করতে পারে।

সঙ্গে থাকুন ➥