গত মাসের শুরুতে Ars Technica নামক সংস্থা, Google বা Apple তাদের তৈরি স্মার্টফোন থেকে ঠিক কী ডেটা সংগ্রহ করে এবং সংগৃহীত ডেটার পরিমাণ কতটা – তা একটি রিপোর্টে প্রকাশ করেছিল। ওই রিপোর্টে দেখা গিয়েছিল আইওএস স্মার্টফোনের থেকে প্রায় ২০% বেশি ডেটা সংগ্রহ করে অ্যান্ড্রয়েড হ্যান্ডসেটগুলি। যদিও ওই সময় Google-এর তরফে এই দাবির জোরালো বিরোধিতা করা হয়। কিন্তু মাস ঘুরতে না ঘুরতে ফের এমনই একটি ডেটা সংগ্রহ সম্পর্কিত খবর সামনে এসেছে, যার জেরে অস্বস্তিতে পড়তে পারে ইন্টারনেট জায়ান্ট সংস্থাটি। আসলে Me2B Alliance নামে একটি নন-প্রফিট অর্গানাইজেশন সম্প্রতি জানিয়েছে যে, শিক্ষার্থীদের জন্য Google-এর অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ্লিকেশনগুলি আইওএস অ্যাপের তুলনায় আট গুণ বেশি ‘বিপজ্জনক’! এছাড়াও এই অ্যাপগুলি তৃতীয় পক্ষের কাছে ডেটা শেয়ার করে এমন সম্ভাবনার কথাও বলেছে Me2B।
প্রযুক্তির খুঁটিনাটি খবরদাতা এই সংস্থাটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ১৪টি রাজ্যের ৩৮টি স্কুলে একটি সমীক্ষা চালিয়েছে এবং এটি প্রায় ৭৩টি মোবাইল অ্যাপ্লিকেশনের নমুনা সংগ্রহ করেছে। এক্ষেত্রে কমপক্ষে দেড় মিলিয়ন স্মার্টফোন ইউজার (শিক্ষার্থী, তাদের পরিবার, শিক্ষক) এই ধরনের অ্যাপ্লিকেশনগুলি ব্যবহার করেছেন বলে Me2B-এর দাবি। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে এই অ্যাপ্লিকেশনগুলিতে কী সমস্যা বর্তমান?
Me2B-এর মতে, Google বা Facebook-এর মত বড় টেক কোম্পানিগুলির সাথে কিছু তৃতীয় পক্ষের সংস্থা এবং বিজ্ঞাপন প্ল্যাটফর্মের যোগসাজশ রয়েছে। সাধারণত Google তার কোনো ডিভাইস থেকে প্রায় ৪৯% ডেটা ট্র্যাফিক গ্রহণ করে; অন্যদিকে Facebook পায় ডেটা ট্র্যাফিকের ১৪%। তবে মাথাব্যথার বিষয় এটাই যে, সমীক্ষায় দেখা গেছে প্রায় ৯১% অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ্লিকেশন, শিক্ষার্থীদের ডেটা কিছু ঝুঁকিপূর্ণ থার্ড পার্টিকে শেয়ার করেছে; যেখানে আইওএস ডিভাইসের মাত্র ২৬% অ্যাপে এই ধরণের ব্যবহার পরিলক্ষিত হয়েছে। শুধু তাই নয়, বেশ কিছু অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ ‘ভেরি হাই রিস্ক’ অর্থাৎ বিপজ্জনক তৃতীয় পক্ষের সাথে ডেটা শেয়ার করেছে বলেও জানা গিয়েছে, যার সংখ্যা প্রায় ২০%। এক্ষেত্রেও আইওএসের এই রকম পরিস্থিতি তেমন আকার পায়নি; মাত্র ২.৬% আইওএস অ্যাপ এরকম ডেটা শেয়ার করেছে। এই ঘটনার জেরেই অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ্লিকেশনগুলিকে ৮ গুণ ঝুঁকিপূর্ণ বলে গণ্য করেছে Me2B।
রিপোর্ট অনুযায়ী, তৃতীয় পক্ষের সাথে শেয়ার করা এই ডেটাতে সাধারণত ইউনিক আইডেন্টিফায়ার (মূলত মোবাইল অ্যাডভার্টাইজিং আইডেন্টিফায়ার বা MAIDs) অন্তর্ভুক্ত ছিল, যার ফলে খুব সহজেই ১৩ বছরের কম বয়সী শিক্ষার্থীদের লক্ষ্যবস্তু স্থির করা গিয়েছে। আবার, শিক্ষার্থীরা সাইন ইন না করা সত্ত্বেও অ্যাপ্লিকেশনগুলি খোলার সাথে সাথে তৃতীয় পক্ষের কাছে তাদের ডেটা পৌঁছে গেছে বলেও দাবি করা হয়েছে। যদিও ঠিক কোন কোন অ্যাপ্লিকেশন এই রকম আচরণ করেছে তা এখনো পর্যন্ত স্পষ্টভাবে জানা যায়নি।